দুশ্চিন্তায় খামারিরা, গোয়ালন্দে ছড়িয়ে পড়েছে এলএসডি

- Update Time : ০৯:৩৯:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
- / ৯ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। গত এক মাসে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শতাধিক গরু। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে ছোট বাছুরের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ায় গরু-বাছুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন খামারিসহ এলাকার হাজারো কৃষক।
এদিকে উপজেলা প্রাণিসস্পদ বিভাগ জানিয়েছে, ছোঁয়াচে হওয়ায় মশা-মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ছে এলএসডি। প্রতিষেধক হিসেবে লাম্পি স্কিন ডিজিজ-এর জন্য সরকারি কোন ভ্যাকসিন নেই। তাই এলএসডি থেকে গবাদিপশু রক্ষায় গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও খামারিদের করণীয় সম্পর্কে সতর্ক করা হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভাসহ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন এলাকায় বিভিন্ন খামার ও কৃষকের ঘরে প্রায় ৮০ হাজার গরু-বাছুর রয়েছে।
বর্তমান সেখানে লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর কর্ণেশোনা, ফকিরাবাদ, আংকের শেখেরপাড়া, হোসেন মন্ডলপাড়া, ছোটভাকলা ইউনিয়নের স্বরূপার চক, ভাগলপুর গ্রাম এলাকায় রোগটির প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, গত এক মাসে চরাঞ্চলসহ গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শতাধিক গরু-বাছুর। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে অধিকাংশই ছোট বাছুর।
উপজেলার অংকের শেখেরপাড়া গ্রামের কৃষক হাসমত আলী বেপারী বলেন, ‘আমার বকনা বাছুরটির সারা গায়ের চামড়ায় গুটি বের হয়ে ফুসকা পড়েছে। প্রচন্ড জ্বর থাকায় বাছুরটি এখন স্বাভাবিক খাবারও (ঘাস-ভূষি) খেতে পারছে না। তাই চিকিৎসা করাতে আমি আমার অসুস্থ বাছুরটি গত বুধবার উপজেলা পশু হাসপাতালে (ভেটেরিনারি হাসপাতাল) নিয়েছিলাম। ডাক্তার দেখে বলেছে, বাছুরটি এলএসডি রোগে আক্রান্ত হয়েছে।’
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি) ছড়িয়ে পড়ায় খামারিসহ এলাকার হাজারো কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
তাদের অনেকের মনে এখন ‘লাম্পি আতঙ্ক’ বিরাজ করছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিস্পদ অফিসার মো. শাহাদাৎ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘লাম্পি স্কিন নামের ভাইরাসজনিত এই রোগটি ছোঁয়াচে। মশা ও মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে এলএসডি সহজে ছড়িয়ে পড়ে। গোয়ালন্দ উপজলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় এই এলএসডি’র প্রাদুুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে বড় গরুর চেয়ে ছোট বাছুর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। লাম্পি স্কিন রোগাক্রান্ত কোন গরু-বাছুর দেড়-দুই মাসের আগে সুস্থ হয় না। রোগটি সম্পর্কে এলাকার কৃষক ও খামারিদের সতর্ক করতে আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক করছি। সেখানে খামার, গোয়ালঘরসহ আশপাশ এলাকা সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা, মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি গরু ও বাছুরকে ভিটামিনযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ানো, নিমপাতার পানি গরম করে সেই পানি দিয়ে গরু-বাছুরকে গোসল করানোসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।’ লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে সরকারি কোন ভ্যাকসিন নেই বলে তিনি জানান।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়