চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে, হদিস নেই একমাত্র এইডস রোগি’র
- Update Time : ০৫:৫৮:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২
- / ২৬৭ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর এক কর্মীর ২০২০ সালে এইডস শনাক্ত হয়। ১ ডিসেম্বর (আজ বৃহস্পতিবার) বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে গত ২৩ নভেম্বর সেই রোগীর খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন এ প্রতিবেদক। কিন্তু তাঁর দেখা তো দূরের কথা, তিনি কোথায় থাকেন তা-ও কেউ বলতে পারেনি।
এ পল্লীর নারীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া বেসরকারি সংস্থা পায়াকটের সাবেক সুপারভাইজার শেখ রাজিব বলেন, ‘আমরা ২০২০ সালে প্রায় এক হাজার ৫০০ যৌনকর্মীর এইচআইভি (এইডসের ভাইরাস) পরীক্ষা করি।
ওই সময় এক নারীর শরীরে এইডস শনাক্ত হয়। এর পর থেকে তাঁকে নানা রকম দিকনির্দেশনা দিই। তিনি যাতে স্বাভাবিক ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন, সে জন্য প্রচুর পরিমাণে সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করি। ’ তিনি জানান, এইডস আক্রান্ত ওই নারীর প্রতিদিন এক হাজার টাকার ওষুধ লাগে, যা তাঁরা ঢাকা থেকে সংগ্রহ করে দিতেন। তবে তাঁদের প্রকল্প গত ২২ মে বন্ধ হয়ে গেছে। এর পরও তাঁরা ওই রোগীর দেখভাল করেছেন। সর্বশেষ অক্টোবর পর্যন্ত ওষুধ এনে দিয়েছেন। তবে বর্তমানে তিনি কোথায় কী অবস্থায় আছেন এবং নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন কি না, তা তাঁদের জানা নেই।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন মো. ইব্রাহিম টিটোন বলেন, ‘পায়াকট ওই রোগীর দেখভাল করত। ’ তবে রোগী এখন ওষুধ খাচ্ছেন কি না এবং তিনি কোথায় আছে, তা তিনি জানেন না।
দৌলতদিয়া পল্লীর বেসরকারি সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির হিসাবে এখানে যৌনকর্মীর সংখ্যা এক হাজার ৩০০ জন। দৌলতদিয়া পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবেশ ঘিঞ্জি। গায়ে গায়ে ঘেঁষে আছে ঘরগুলো। স্বাভাবিক স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নেই সেখানে। যৌনকর্মীরা কেউ তাঁদের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, কেউ বা অলিগলিতে পায়চারী করছেন। রয়েছে বেশ কিছু শিশুর আনাগোনা। সেখানে প্রবেশ করতেই নাকে এলো উটকো গন্ধ। ভেতরে থাকা দোকানগুলো ঘিরে বসেছে মজমা। সেখানে যৌনকর্মী ও খরিদ্দাররা খাচ্ছেন মাদক, উত্তেজক পানীয়সহ নানা রকমের খাদ্যসামগ্রী।
বেসরকারি সংস্থা পায়াকট বাংলাদেশের দৌলতদিয়ার কর্মকর্তা মো. মজিবুর রাহমান জুয়েল জানান, এখানে তিনটি প্রকল্প ছিল। পল্লীর ১৬টি শিশুকে নিয়ে একটি সেফ হোম, শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা ও কর্মীদের যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধ প্রকল্প। এর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ প্রকল্পটি গত ২২ মে বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে পল্লীর কর্মীরা বর্তমানে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন। কারণ তারা মেয়েদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা, ওষুধসহ ২৩টি সেবা দিয়ে থাকে। গড়ে প্রতি মাসে এক লাখ ২০ হাজার সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করত, যা এখন বন্ধ আছে।
দৌলতদিয়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা সৌরভ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এইডস ছাড়াও এ পল্লীর কর্মীরা সিফিলিস, গনোরিয়া, হার্পিস সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। ’
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল হক জানান, যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। সেখানে নিয়মিত টিকাদান কর্মক্রম পরিচালনা করা হলেও স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। — দৈনিক কালের কণ্ঠ।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়