“স্বাদে অনন্য ইসলামপুরের আরিফুলের “স্বরদই” পেরিয়েছে রাজবাড়ীর সীমানা ”

- Update Time : ০৮:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
- / ১৬২ Time View

রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
চাকরী থেকে অবসরে যাবার পর একটি গাভী নিয়ে খামার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন সাবেক সেনা সদস্য মোঃ আরিফুল ইসলাম। পরবর্তীতে একে একে ২৩ টি গরুর খামার হয় তার। যা থেকে উৎপাদত হওয়া শুরু করে শত শত লিটার দুধ। ওই খামারের একটি গরুর ওজন হয়েছিলো ২৩ মন পর্যন্তও। তবে মহামারী করোনায় পুরো খামারের চিত্র উলট পালট হয়ে যায়। পুকুরের পানিতে ফেলতে হয় গাভীর দুধ। একরাশ হতাশার মধ্যেই ২০২০ সালে তিনি শুরু করেন, দুধ দিয়ে তৈরী মিষ্টি ও স্বরদই। এরপর আর তাকে পিছু ফিরতে হয়নি। এখন শুধু তার খামারই নয়, পাশ^বর্তী বেশ কয়েকটি খামারের দুধ সংগ্রহ করে নিজস্ব কারখানায় স্বরদই, রসমালাই, মালাইকারী, কালো জাম, রসগোল্লা, চমচমসহ ৮ ধরণের মিষ্টি তৈরী করে তা বিক্রি করছেন। তার উৎপাদিত “আকিব সুইটস” মিষ্টির কদর এতোটাই যে রাজবাড়ী জেলার গন্ডি পেরিয়ে অন্যান্য জেলায় পাঠানোর অর্ডার পাচ্ছেন তিনি। আরিফুল ইসলাম রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে।
সরজমিনে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত ভেল্লাবাড়ীয়া গ্রামে অবস্থিত আরিফুল ইসলামের “আকিব ডেইরি এন্ড সুইটস” খামার ও কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, মালিক ও শ্রমিকরা মাহাব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিনিয়ত আসছে অর্ডার আর ওই সব অর্ডারের দই ও মিষ্টি প্যাকেট করে পাঠানো এবং কারিগররা একের পর এক আইটেমের মিষ্টি তৈরী করছেন।
ওই কারখানার কারিগর কবির খান বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে গরুর শতভাগ খাঁটি দুধ দিয়ে তারা স্বরদই, রসমালাই, মালাইকারী, কালো জাম, রসগোল্লা, চমচমসহ ৮ ধরণের মিষ্টি তৈরী করছেন। গুনগতমান ও স্বাদ এতোটাই ভালো যে কোন ক্রেতা একবার মুখে তুললেই তাকে পুনরায় আবার কিন্ত হয় তাদের পন্য।
শ্রমিক বকুল খান বলেন, এই খাবার ও কারখানার কারণে তাদের বেশ কয়েক জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। একই সাথে দিন দিন যেভাবে এখানকার উৎপাদিত পন্যের কদর বাড়ছে, তাতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আরো লোকের দরকার হবে এবং মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, খুব কম সময়ে “আকিব সুইটস” এলাকায় পরিচিত হয়ে উঠেছে। এখানকার উৎপাদিত স্বরদই এখন অনন্য। স্থানীয় রাজাপুর বাজারে “আকিব সুইটস”-এর যে শো-রুম রয়েছে, সেখানে প্রতিনিয়ত ক্রেতার ভীর থাকে। বিশেষ করে বিকালে মানুষের ঢল হয়।
অপর বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, গুনগত মান ও স্বাদ সঠিক থাকায় ক্রেতাদের আস্থা “আকিব সুইটস”-এর স্বরদই এর দিকে। অন্যান্য মিষ্টির চাইতে স্বরদই-এর ক্রেতা বেশি।
“আকিব ডেইরি এন্ড সুইটস” -এর মালিক আরিফুল ইসলাম বলেন, স্বল্প সময়ে কঠোর পরিশ্রমের কারণে আজ তার কারখানায় উৎপাদিত স্বরদই, রসমালাই, মালাইকারী, কালো জাম, রসগোল্লা, চমচমসহ ৮ ধরণের মিষ্টির বাজারে ব্যাপক কদর। এখন তার কারখানায় প্রতিদিন ৬শত থেকে ৭শত লিটার গরুর দুধের ব্যবহার হচ্ছে। এক সময় ক্রেতার অভাবে তাকে দুধ ফেলে দিতে হয়েছে, এখন তিনি শুধু তার নিজের খামারই নয়, আশপাশের বেশ কয়েকটি খামার থেকে দুধ সংগ্রহ করে স্বরদইসহ অন্যান্য মিষ্টি উৎপাদন করছেন। তিনি বেশ লাভবানও হচ্ছেন। একই সাথে জেলার গন্ডি পেরিয়ে তার উৎপাদিত স্বরদই ও মিষ্টি রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতে শুরু করেছেন। আশা করছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তার উৎপাদিত পন্যের চাহিদা আরো বেরে যাবে এবং তার দেখা দেখি নতুন নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা খায়ের উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় আরিফুল ইসলাম তার খামার ও কারখানা পরিচালনা করে আসছেন। গুনেমাণে আরিফুল ইসলামের কারখানার উৎপাদিত স্বরদই ও মিষ্টি অনন্য হওয়ায় বাজারে ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। আর এই কারখানার কারণে আশপাশ এলাকা গড়ে উঠা খামারীদের গরুর দুর বিক্রিতেও দূর্ভোগ পেহাতে হচ্ছে না।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়