রাজবাড়ীর আদালতে মাদক মামলায় ব্যতিক্রমী রায় প্রদান

- Update Time : ১০:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
- / ২৯৭ Time View

রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী আদালতে মাদক মামলার সাজার এক বছরে ১২ জন বীরমুক্তিযোদ্ধার সাথে সাক্ষাৎ করাসহ আসামীকে ৯ শর্তে পূরণ করার ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ইকবাল হোসেন। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারী) জেলার পাংশা উপজেলার মৈশালা (বড়গাছি) গ্রামের মোহাম্মদ আলী সরদারের ছেলে মোঃ কামাল সরদারের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে অতিরিক্ত আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ে দ-িত করা হয়।
পরবর্তীতে মোঃ কামাল সরদারের পক্ষে তার আইনজীবি দরখাস্ত দাখিল করেন যে, তাকে সংশোধনের জন্য প্রবেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬০ সনের সেকশন ৫ ধারা মোতাবেক আদালতের সন্তুষ্টিতে প্রবেশনে যেতে রাজী আছেন। তার আবেদন পর্যালোচনায় পূর্বে কোন মামলায় হাজতবাস বা করাভোগ করেনি। আসামীর পিসি, পিআর নীল। আসামীর বয়স খুব বেশি নয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় অক্রাদালতের কাছে প্রতিয়মান হয় তাকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিলে তিনি সামাজিক মূল স্রোতে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে প্রার্থনা সহকারে বলেন, তিনি কখনও আইন শৃঙ্খলার পরিপন্থি কোন কাজ করবেন না। কখনও মাদক সেবন করবেন না বা মাদক গ্রহনকারীদের সাথে চলাফেরা করবেন না। সার্বিক দিক বিবেচনায় আদালত তাকে ৯ শর্ত দিয়ে সাজা মওকুপ করেন। শর্ত হলো, প্রবেশন অফিসার ধার্য্যকৃত নিয়ম-কানুন পালন, সামাজিক বনায়নে অংশগ্রহণ, মাদক বিরোধী যে কোন আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে, শিক্ষা ও গঠণমূলক যে কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে, যুব সমাজের উন্নয়নে যে কোন শিক্ষামূলক আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করতে হবে, অসমাপ্ত আতœজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও শেষের কবিতা বই তিনটি ক্রয় করে নিজের দোকানে রাখবে এবং এলাকার মানুষদেরকে উক্ত বই ৩টি পড়তে উদ্বুদ্ধ করবে, পিতা-মাতাকে সাধ্যমত সেবা যতœ করবে, ১ বছরে রাজবাড়ীর ১২জন বীরমুক্তিযোদ্ধার সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং তাদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানবে, জিম্মার বিষয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী ৫০ টাকার ষ্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা প্রদান করবেন। এ বিষয়ে প্রবেশন কর্মকর্তা ৩মাস অন্তর পর্যবেক্ষণ পূর্বক প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন।
এ নির্দেশনার যে কোন একটি শর্ত ভঙ্গ হলে অথবা প্রবেশন অফিসার কর্তৃক কোন বিরুপ মন্তব্য মূলক প্রতিবেদন আসলে আসামী শর্তগুলো ভঙ্গ করেছেন মর্মে ধরা হবে। তখন থেকে আসামীর উপর ধার্যকৃত শান্তি কার্যকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ী জেলা বার এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খান মোহাম্মদ জহুরুল হক বলেন, এ রায় একটি ব্যতিক্রমী ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এতে অপরাধীদের সংশোধনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ রকম দেশের সব আদালতেই করা উচিত।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়