কমলা চাষে সফল রাজবাড়ীর ছরোয়ার, গাছে থাকতেই বাগানের ৮০ ভাগ ফল বিক্রি
- Update Time : ১১:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২
- / ২৩৫ Time View
রুবেলুর রহমান, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনায় উদ্ভুদ্ধু হয়ে ইউটুব দেখে কমলা চাষে আগ্রহ। এবং বিষমুক্ত ফল বাজারজাত করার লক্ষে কমলা চাষ করে সফল রাজবাড়ীর ছরোয়ার হোসেন বিশ্বাস। তার বাগানে দার্জিলিং সহ চার জাতের কমলার চাষ হচ্ছে।
উদ্দ্যোক্তা ছরোয়ার হোসেন বিশ্বাস রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউপির চরবাগমারা এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেন বিশ্বাসের ছেলে।
জানাগেছে, করোনাকালীন সময়ে বিকল্প অয়ের উৎস হিসাবে কিছু করার লক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনায় উদ্ভুদ্ধু হয়ে ২০২০ সালের শেষের দিকে ইউটুব দেখে কমলা ও মাল্টার বাগান চাষে উদ্ভুদ্ধ হন ছরোয়ার হোসেন বিশ্বাস। পরবর্তীতে উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে ১৬০ টি কমলার চারা সংগ্রহ করে বাড়ীর পাশে পতিত প্রায় পৌনে ২ বিঘা জমিতে কয়েকটি জাতের কমলার চাষ শুরু করেন। তিন বছর পর ফলন পাবার কথা থাকলেও দুই বছরেই প্রতিটি গাছেই প্রচুর ফলন দেখা দেয়। এবং কমলার আকার, রং, রস দেখে খুশি উদ্দ্যোক্তা ছরোয়ার। প্রতিদিন বাগান দেখতে দুর-দুরান্ত আসছেন অনেকে। কমলা সুস্বাদু হওয়ায় গাছ থেকেই ২শ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে বাগানে দার্জিলিং, চায়না ও নাগ পুরি চার জাতের কমলা রয়েছে। পাশাপাশি তার ভাইদের সাথে যৌথভাবে রয়েছে মাল্টা, ড্রাগন ও পেয়ারা বাগান। তাদের দেখাদেখি অনেকেই আগ্রহি হচ্ছেন ফল বাগানের প্রতি।
কাজী জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুস সোবহান সহ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, এই অঞ্চলে এই রকম কমলার বাগান এরআগে কখনও দেখেন নাই। প্রতিটি গাছেই কমলায় পরিপূর্ণ। কমলা ছিরে খেয়ে দেখেছেন অনেক মিষ্টি। যার কারণে তারা একটি দুইটি গাছের কমলা কিনে নিয়েছেন। এবং নিজেরা বাগানের কথা ভাবছেন।
উদ্দ্যোক্তা ছরোয়ার হোসেন বিশ্বাস বলেন, ছোট বয়স থেকেই তার ফল চাষে আগ্রহ ছিলো। কিন্তু নানান কারণে করা হচ্ছিল না। করোনাকালীন সময়ে যখন বেকার সময় কাটাচ্ছিলেন তখন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে বিকল্প আয়ের উৎস খুজতে ইউটুব ঘাটতে থাকেন। এক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গার একটি বাগান দেখে কমলা চাষে আগ্রহ হয়। এবং বাড়ীর পাশের পতিত জমিতে ফল বাগানের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে ১৬০টি কমলার চারা এনে তার বাড়ীর পাশে পৌনে দুই বিঘা জমিতে রোপন করেন। রোপনের তিন বছরে ফলন পাবার কথা থাকলেও দুই বছরেই ফলন পান। এবং তার প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমান ফল এসেছে। এই গাছ গুলোতে প্রায় ১০ বছর ফল ধরবে। বাগানটি করতে প্রায় পৌনে চার লক্ষ খরচ হয়েছে। যা এবার কমলা ও চারা বিক্রিতে উঠে যাবে। ২শ টাকা কেজি দরে গাছে থাকতেই কমলা বিক্রি হচ্ছে। সুস্বাদু হওয়ায় তার বাগানের কমলার অনেক চাহিদা। বর্তমানে বাগানের প্রায় ৮০ ভাগ ফল বিক্রি হয়ে গেছে। আগামীতে তিনি আরও বেশি জমিতে কমলার চাষ করবেন। ফলন দেখে যেমন তিনি খুশি, তেমনি দর্শনার্থী দেখেও খুশি। কমলার পাশাপাশি তাদের মোট ১০ বিঘা জমিতে মাল্টা, ড্রাগন ও পেয়ারার চাষ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার বাগানে বিষমুক্ত ফল উৎপাদন হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম সহীদ নূর আকবর বলেন, রাজবাড়ীতে বর্তমানে কমলা ও মাল্টা সহ মিশ্র ফল বাগানে আগ্রহী হচ্ছে অনেকে। এসকল উদ্দ্যমী চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছে উপজেলা কৃষি অফিসার। এই অঞ্চলে কমলা ও মাল্টা চাষ অনেক কঠিন। তারপরও তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় বেশ কয়েকটি ভাল বাগান হয়েছে। এবং ফলনও ভাল হয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়