রাজবাড়ীতে আন্তর্জাতিক দূর্নীতি প্রতিরোধ দিবস পালিত
- Update Time : ১১:০২:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২
- / ১৫৪ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) রাজবাড়ী কর্তৃক “দুর্নীতির বিরুদ্ধে বৈশি^ক ঐক্য” এই প্রতিপাদ্যে নিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯ টায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে হতে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবস উপলক্ষে আলোচনা মানববন্ধনে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাহউদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে একটি র্যালী জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।
আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২২: টিআইবির দাবি আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২২ উপলক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে টিআইবি সংশ্লিষ্ট অংশীজনের বিবেচনার জন্য নি¤œলিখিত সুপারিশসমূহ প্রস্তাব করছে।
১. প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত “দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুন্য সহনশীলতা” নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের লক্ষে জাতীয় কৌশল প্রণয়ন ও সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে; দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে, সে জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং সকলের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে;
২. সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষে গণশুনানির মতো জনগণের অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে;
৩. পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ‘‘নাগরিকদের’’ স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে ডিজিটাল স্পেসে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২২ আইনটি প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি আইনটি বাস্তবায়নের জন্য উন্নতবিশে^র আদলে একটি স্বাধীন ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে;
৪. “রেগ্যুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস” এর খসড়াটিতে আইনের ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ আছে, যা জনগণের কণ্ঠরোধে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এটিকে বাতিল করে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় নতুন একটি খসড়া প্রণয়ন করতে হবে;
৫. সকল নাগরিকের বাক্স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’’ ও ‘‘ফরেন ডোনেশনস (ভলান্টারি অ্যাক্টিভিটিস) রেগুলেশন অ্যাক্ট’’ এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে;
৬. আসন্নদ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভয়-করুণা ও প্রভাবের ঊর্ধ্বেউঠে নির্বাচন কমিশনকে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল অংশীজনের প্রতিবন্ধকতাবিহীন অংশগ্রহণ ও নির্বাচনসংক্রান্ততথ্য সংগ্রহ, প্রচার ও প্রকাশকে অবাধ ও মুক্ত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে কঠোরভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে;
৭. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ বাতিল করতে হবে এবং ২০২২ সালের পরে নতুন কোনো প্রকার জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থায়ন না করার ঘোষণা দিতে হবে;
৮. কর ফাঁকি ও অর্থপাচার রোধে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে দেশে-বিদেশে সকল প্রকার লেনদেনের স্বয়ংক্রিয় তথ্য আদান প্রদানসহায়ক ‘‘কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড’’ (সিআরএস) অনতিবিলম্বে অবলম্বন করাতে হবে;
৯. ঋণ খেলাপিতে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও জালিয়াতি এবং বেসরকারি ব্যাংকের নজিরবিহীন আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবনা প্রণয়নের জন্য যথাযথ যোগ্যতাসম্পন্ন, নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে হবে;
১০. বিভিন্ন সেবাখাতে দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অবস্থান ও পরিচয় নির্বিশেষে আইনানুগভাবে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে; এক্ষেত্রে বিভাগীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে;
১১. দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটির ওপর সকল প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ; সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে দুদকে নেতৃত্ব পর্যায়ে অকুতোভয় সৎসাহস, দৃঢ়তা ও নিরপেক্ষতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ওপর অর্পিত আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনে দৃষ্টান্তমূলক কার্যকরতা নিশ্চিত করতে হবে;
১২. তরুণ সমাজসহ সকল নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আইন ও নীতিকাঠামোর প্রয়োজনীয় আমূল সংস্কার করতে হবে;
১৩. অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে সকল অভীষ্টের কার্যকর বাস্তবায়নের পূর্বশর্ত হিসেবে অভীষ্ট-১৬ এর ওপর সর্বাধিক প্রাধান্য নিশ্চিত করতে হবে এবং এ লক্ষে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে;
১৪. প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় পেশাদারি উৎকর্ষ, নিরপেক্ষতা ও কার্যকরতা বৃদ্ধির লক্ষে একটি সমন্বিত ও পরিপূরক কৌশল গ্রহণ করতে হবে; একইসঙ্গে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনৈতিক ও সরকারি প্রভাবমুক্ত করতে হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়