পাল্টে গেছে দৌলতদিয়া ঘাটের দৃশ্যপট : ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে থাকবে না দুর্ভোগ
- Update Time : ০৫:৩০:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
- / ৩১৭ Time View
আজু শিকদার, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুট। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে দুর্ভোগের নাম ছিল এ নৌরুট। যা প্রতিটি ঈদে মহা দূর্ভোগে পরিনত হতো। ফেরি পেতে অপেক্ষা করতে হত ঘন্টার পর ঘন্টা। তবে এখন ভিন্ন চিত্র। ঘাটে ফেরিই অপেক্ষা করছে গাড়ীর জন্য। তাছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরে ভোগান্তিমুক্ত পারাপারে কর্তৃপক্ষ গ্রহন করেছে নানা উদ্যোগ। তাই এবার ঈদের আগে ও পরে ঘাটে হবে না কোন দুর্ভোগ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দৌলতদিয়া ঘাটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপন ও যাত্রী পারাপারসহ যাতায়াত নির্বিঘœ করতে অনুষ্ঠিত হয় ঈদ সমন্বয় সভা। এতে উপস্থিত ছিলেন ঘাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ।
সভা সূত্রে জানা যায়, ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী ফেরিগুলোর খুটিনাটি সমস্যা মেরামতের কাজ পুরোদমে চলছে। পারাপারে যাতে কোন সমস্যা না হয়, এ লক্ষ্যে নৌরুটের ফেরি বহরে ২০টি ফেরি প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রী পারাপারের জন্য ফেরির পাশাপশি ২২টি লঞ্চ চলাচল করবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রী হয়রানি বন্ধ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ন্ত্রণে ভাড়া মনিটরিং করবে প্রশাসন। এছাড়া সার্বক্ষনিক ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়ন থাকবে।
এদিকে সোমবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়, সড়কে নেই কোন গাড়ীর সারি। আগের মত হাকডাক নেই হকারের। দৌলতদিয়া ঘাটের শতাধিক হোটেলের চেয়ার টেবিলে পড়েছে ধুলার স্তর। ঘাট কেন্দ্রিক অধিকাংশ হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে আরো আগেই। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে কমেছে যানবাহনের সংখ্যা। বিআইডাব্লিউটিসির তথ্যমতে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার গাড়ী পার হয়। যেটি পদ্মা সেতু চালুর আগে প্রতিদিন সাড়ে চার থেকে ৫ হাজার গাড়ী পারাপার হত। পদ্মা সেতু চালুর আগে দৌলতদিয়ায় দুর্ভোগ ছিল নিত্য সঙ্গি।
তবে ভিন্ন রকমের ভোগান্তির অভিযোগ করেন দৌলতদিয়া ৭নং ফেরি ঘাটে যানবাহনের জন্য অপেক্ষমান রোরো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানে থাকা ব্যাক্তিগত গাড়ি চালক মো. শাহিনুর রহমান। তিনি জানান, ভোগান্তির চিত্র পরিবর্তন হলেও দৌলতদিয়া ঘাটে ভোগান্তি রয়েই গেছে। আগে ফেরির নাগাল পাওয়া ছিল সোনার হরিণের মত। কিন্তু এখন চিত্র ভিন্ন। প্রায় একঘন্টা তীব্র রোদের মধ্যে ফেরিতে উঠে বসে আছি। পর্যাপ্ত যানবাহন লোড না হওয়ার কারণে ফেরি ছাড়ছে না। এটা আরেক ধরনের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
পূর্বাশা পরিবহনের সুপার ভাইজার আরিফুর রহমান জানান, এখন ঘাটগুলোতে গাড়ীর অপেক্ষায় ফেরি বসে থাকে। অনেক সময় পর্যাপ্ত গাড়ী না পেয়ে অর্ধেক গাড়ী নিয়েই ফেরি ছেড়ে যায়। এজন্যই এরুটে এবার ঈদে দুর্ভোগ হবে না। তবে এবারের ঈদে এরুটে বাড়তে পারে মোটরসাইকেলের চাপ।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌরতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, আগামী ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো ও কর্মস্থলগামী মানুষকে নির্বিঘেœ পারাপার করতে তারা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন। ঈদের আগে ও পরে নৌরুটের ফেরি বহরে ছোটবড় মিলিয়ে ২০ ফেরি চলবে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে ঈদের আগে ও পরে কোন প্রকার দুর্ভোগ হবে না ঘাটে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়