হেমন্তে আগ্রাসী রূপে পদ্মা : রাজবাড়ীর বড়চর বেনীনগর ও চর সিলিমপুরে তীব্র ভাঙ্গন
- Update Time : ১০:১২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
- / ৪৫ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
হেমন্তকালে আগ্রাসী রূপ নিয়েছে পদ্মা। রাজবাড়ীতে গত কয়েকদিনে পদ্মার পেটে গিয়েছে ছয়শ বিঘার উপরে ফসলি জমি। ভাঙন দেখা দিয়েছে শহর প্রতিরক্ষা বাধে। হুমকিতে রয়েছে বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। পাউবো জানিয়েছে গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায়।
সোমবার দুপুরে ভাঙ্গন কবলিত রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বড়চর বেনীনগর, কালিতলা, চর সিলিমপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীতে প্রচুর ¯্রােত। বড় চরবেনিনগর এলাকায় পদ্মা নদীর মাঝামাঝি এলাকায় চর জেগেছে। ফলে মুল ¯্রােত পদ্মার ডান দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর নদীতে প্রচুর ¯্রােত থাকায় নদীর ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বরচর বেনিনগর, কালিতলা, চরসিলিমপুর গ্রামের তিন কিলোমিটার এলাকা জুরে চলছে এই ভাঙন । এরই মধ্যে এসব এলাকার ছয়শ বিঘার বেশি কৃষি জমি নদীতে বিলিন হয়েছে। এছাড়া লালগোলা এলাকায় তীররক্ষা প্রকল্পের ৮০ মিটার ব্লক ধসে গিয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে এভাবে ভাঙ্গন চললেও এখনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব না হলে অনেক ঘরবাড়ি ও নানা স্থাপনায় পদ্মায় চলে যাবে। অনেকে এই ভাঙ্গনের একটি কারণ হিসেবে দায়ি করছে পদ্মা থেকে বালি উত্তোলন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজানে অসময়ে বন্যায় পদ্মায় পানি প্রবাহ বেড়েছে। সেই সাথে পানি কমায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ।
নদীর পারে ক্ষেত থেকে সবজী তুলতে আসা খোদেজা বেগম বলেন, আমাদের ছয় বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। জমিতে পালক শাক, উস্তে, বেগুন ও টমেটো চাষ করেছিলাম। অল্প একটু জমি আছে সেটুকু রাতে মনে হয় থাকবে না। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে আমাদের বাড়িঘরও থাকবে না।
ছুরাপ বেপারী বলেন, আমাদের বাড়ি ছাড়া মাঠের জমি সবই শেষ। এখন কী করে খাব জানি না। একদিকে পদ্মায় বালি তুলছে অন্যদিকে নদী ভাঙ্গছে। বালি তোলা বন্ধ হলেও ভাঙ্গন কিছুটা কমবে। আর ভাঙ্গন দেখা দিলে তখন দুই বস্তা ব্যাগ ফেলে চলে যায়। তাতে কিছুই হয় না। ভাঙ্গন ঠেকাতে হলে বড় উদ্যোগ নিতে হবে।
রাজবাড়ী নাগরিক সমাজের সভাপতি জ্যোতি শংকর ঝন্টু বলেন, রাজবাড়ীর চার উপজেলা মিলে ৬৫ কিলোমিটার পদ্মার পার রাজবাড়ী। প্রতিবছর কমবেশি নদী ভাঙ্গন হয়। তবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়না। আমরা শুনেছি রাতের বেলা নদীর কিনার থেকে বালি তোলা হয়। ভাঙ্গনের জন্য বালি উত্তোলনও একটি কারণ। আর যে ভাবে নদী ভাঙ্গছে তাতে রাজবাড়ী শহরই হুমকিতে। জেলাকে পদ্মার গ্রাস থেকে বাঁচাতে হলে শুধু বালুর বস্তায় হবে না। বড় বাজাটের মাধ্যমে স্থায়ী ভাবে ভাঙ্গন রোধে কাজ করতে হবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অংকুর বলেন, শহর রক্ষা প্রকল্পের যে স্থানে ভেঙ্গেছিল সেখানে বস্তা ফেলা হয়েছে। নতুন করে আর ভাঙ্গবে না। তবে মিজানপুর ইউনিয়নের যে স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সেখানে আমরা কাজের অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করবো।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়