আমি নিজেই অন্যের তদন্ত করি, আমার তদন্ত কে করবে – রাজবাড়ীর মৎস্য খামার ব্যবস্থাপক লতিফুর রহমান
- Update Time : ০৯:১৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
- / ২১৩ Time View
লিটন চক্রবর্তী, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীর সরকারি মৎস বীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্থাপক মোঃ লতিফুর রহমানের বিরুদ্ধে খামারের পুকুরে উৎপাদিত রেনু ও পোনা বিক্রি করে টাকা আত্মসাথের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জানতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে বলেন, এরকম কত অভিযোগ হল, যা পারেন করেন। আমার চাকরি আছে দুই বছর সারা চাকরি জীবনে কেউ কিছু করতে পারলো না।
লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, গত ১৬ জানুয়ারী রাজবাড়ী সরকারি মৎস বীজ উৎপাদন খামার খেকে ১৪ কেজি রেনু বিক্রি করেন লুৎফর রহমান। প্রতি কেজি রেনুর সরকারি দাম এক হাজার নয়শ টাকা হলেও তিনি চার হাজার টাকা কেজিতে এসব রেনু বিক্রি করেন। গোপালগঞ্জের হামিমের কাছে চার কেজি কার্প জাতীয় রেনু, রাজবাড়ীর মধুসুদনের কাছে দুই কেজি, নুর ইসলামের কাছে দুই কেজি, ইউনুস আলীর কাছে তিন কেজি, বোয়ালমারী মিজানের কাছে দুই কেজি আর কালুখালি এলাকার ইউসুফের কাছে এক কেজি রেনু বিক্রি করেন। যারা রেনু ক্রয় করে তাদের সরকারি মূল্যের কোন রশিদও দেয় না। ১৪ কেজি রেনু বিক্রি করা ৫৬ হাজার টাকা সরকারি কোষাগাড়ে জমা না দিয়ে লুৎফর রহমান আত্মসাৎ করেন। এছাড়া গত মাসেও ১০ কেজি রেনু বিক্রির ৪০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগাড়ে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে। প্রতি বছরই এভাবে কয়েক লক্ষ টাকার রেনি বিক্রি করে খামারের ব্যবস্থাপক মোঃ লুৎফর রহমান টাকা আত্মসাথ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
রেনু বিক্রির এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বুধবার দুপুরে রাজবাড়ী সদর থানার পাশে সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে যায় রাজবাড়ী রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ও এটিএন বাংলা, ভোরের কাগজের প্রতিনিধি লিটন চক্রবর্তী, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের স্টাফ রিপোর্টার্স সুমন বিশ্বাস, মাছরাঙ্গা টিভির প্রতিনিধি ইমরান হোসেন মনিম ও দৈনিক গণমুক্তির সাংবাদিক আতিয়ার রহমান। এসময় খামার ব্যবস্থপকের কক্ষে বসে সাংবাদিকরা রেনু বিক্রির টাকা আত্মসাথের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোঃ লুৎফর রহমান প্রথমেই উত্তেজিত হয়ে বলেন, এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান এখানকার কোন তথ্য আপনাদের দিতে পারবো না। আমি যে রেনু বিক্রি করি সেটি জেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করেই করি। রেনু বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগাড়ে জমা না দিয়ে কেন আত্মসাথ করেছেন এবং সরকারি দামের থেকে কেন বেশি দামে বিক্রি করেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ কত পেলাম। আমি নিজেই মৎস্য অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তার অভিযোগের তদন্ত করি- একথা বলে একটা ফাইল ছুরে বলে আজও একটা তদন্ত করলাম। সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একজন অভিযোগ দিয়েছিল। এসব অভিযোগে কিছু হয়না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে। আমার তদন্ত কে করবে? একপর্যায়ে তিনি বলেন, আমার অফিস থেকে তোরা বের হ। না হলে আমি থানায় মামলা করবো আর পুলিশে খবর দেব। তুই করে কেন কথা বলছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তোরা সবাই আমার জুনিয়র। আমি তোদের থেকে অনেক ছিনিয়র। আমি এখানে যা করি আমার অফিস ম্যানেজ করেই করি। এসময় অফিসের অন্য কর্মচারীদের ডেকে বলেন, গেট আটকাও আর এদের সবার ছবি তুলে রাখ। সবগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আপনি এত উত্তেজিত হচ্ছেন কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি জেমএমবির বাপ। আমার পারিবারিক পরিচয় জানলে তোরা এখানে আসতে পারতি না। আমার বাড়ি এই রাজবাড়ী শহরে। আমার ডিআইজিসহ অনেক বড় আত্মীয় স্বজন রয়েছে।
বিষয়টি রাজবাড়[ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমানকে জানালে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে এমন আচরণ করেছে বিষয়টি জেনে আমি লজ্জিত। আমি আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানাবো। আর রেনু বিক্রি করে টাকা আত্মসাথ করেছে বিষয়টিও তদন্ত করা হবে। আর অন্য একটি বিষয়ের সে তদন্ত সে তদন্ত কর্মকর্তা সেটি একান্ত অফিসিয়াল বিষয়। সেটি তিনি রক্ষা না করে আপনাদের কাছে বলেছে এটিও তো একটা অপরাধ।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়