ঈদে গরুর ট্রাক ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়ায় ব্যাপক প্রস্তুতি

- Update Time : ০৯:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / ৬ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা ২০২৫ উপলক্ষে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ঘরমুখো মানুষ ও কোরবানির পশুবাহী যানবাহনের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট নিরসন, যাত্রীসেবা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন, পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসি।
বিআইডব্লিউটিসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈদে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে এ রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭টি ফেরি এবং ২০টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দৌলতদিয়া প্রান্তের তিনটি ঘাটের ৮টি পকেট সচল থাকবে এবং পদ্মার পানি বাড়লে আরও একটি ঘাট চালু করা হবে। বিশেষ করে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক দ্রুত পারাপারে থাকবে অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবস্থা।
পদ্মা সেতু চালুর পর এই নৌরুটে যানবাহনের চাপ কিছুটা কমলেও ঈদ মৌসুমে তা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ঈদের সময় প্রতিদিন ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার যানবাহন ও ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। এর মধ্যে গরুবোঝাই অতিরিক্ত ট্রাক যুক্ত হওয়ায় ঘাট ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি হয় বাড়তি চাপ। ভোগান্তি কমাতে ঈদের আগে ও পরে সাতদিন নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঈদের ১০ দিন আগে-পরে জরুরি পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া সব ধরনের ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকছে একাধিক স্তরের নজরদারি। ঘাট এলাকায় মোতায়েন থাকবে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যাত্রী হয়রানি, চাঁদাবাজি, দালাল, ছিনতাই ও মলমপার্টি দমনে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা, যাত্রী ও পরিবহন চালকেরাও ঘাট ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ কিছুটা কমেছে এবং প্রশাসনের তৎপরতায় ঘাটে এখন আর আগের মতো ভোগান্তি নেই। তবে বৈরী আবহাওয়া ও পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ভোগান্তির শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধে ঘাটে থাকবে প্রশাসনের তৎপরতা। ২০টি লঞ্চ চলাচলে যাত্রী পারাপারে সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ফেরিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে ১৭ টি ফেরি প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি ঘাটের ৮টি পকেট সচল থাকবে এবং পদ্মার পানি বাড়লে আরও একটি ঘাট চালু করা হবে। বিশেষ করে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক দ্রুত পারাপারে থাকবে অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবস্থা। ঘাট ব্যবস্থাপনায় কোনো জটিলতা নেই।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, যানবাহনের চলাচল মনিটরিং ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদীপথে পশুবাহী ট্রলার চলাচলে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ, নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করছে। এবং সড়কের নিরাপত্তায় হাইওয়ে পুলিশ কাজ করবে বলে তিনি জানান।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, যাত্রীদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের একাধিক মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। যাত্রী হয়রানি রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পশুবাহী ট্রাক এবং নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক হবে—এমন প্রত্যাশা ঘরমুখো যাত্রী ও চালকদের।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়