আজ রাজবাড়ী মুক্ত দিবস, রাজবাড়ী বার্তা’র শুভেচ্ছা –

- Update Time : ০৩:২১:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০
- / ২৬ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী মূলত রেলের শহর হিসেবে পরিচিত। সে সুবাদে এখানে প্রায় ২০ হাজার অবাঙ্গালী বিহারীর ছিলো বসবাস। যে কারণেই ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশ স্বাধীন হলেও রাজবাড়ী ছিলো অবাঙ্গালী বিহারীদের দখলে। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন-মরন যুদ্ধের কারণে দুই দিনপর ১৮ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় রাজবাড়ী। মূলত অবাঙ্গালী বিহারীদের বসবাস ছিল রাজবাড়ী শহরের নিউ কলোনি, আঠাশ কলোনী, ষ্টেশন কলোনী ও লোকোশেড কলোনী এলাকায়।
১৯৭১’র সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাদের প্রচন্ড প্রভাব ছিলো জেলা শহরে। সারাদেশ যখন স্বাধীনতার আনন্দে ভাসছে রাজবাড়ীতে তখনও চলছে অবাঙ্গালী, বিহারী, পাকবাহিনী ও রাজকারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমল যুদ্ধ। পড়ে রাজবাড়ী শহরকে শত্রুমুক্ত করতে রাজবাড়ীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় বিহারী অবাঙ্গালীদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে তাদের পরাজিত করে রাজবাড়ীকে ১৮ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত ঘোষনা করা হয়।
সে সময় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক বাহিনী রাজবাড়ীতে প্রবেশের পর বিহারীরা তাদের সাথে যোগসাজসে নির্বিচারে চালাতে থাকে জ¦ালাও পোড়াও এবং গণহত্যা। সে সময় মুক্তিযোদ্ধারা রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে ৮টি গ্রুপ বিভক্ত হয়ে পাক বাহিনী, অবাঙ্গালী ও বিহারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকে। রাজবাড়ী জেলা শহরকে শত্রুমুক্ত করতে পাংশা, কুষ্টিয়া, যশোর ও মাগুরা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ১৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক বাহিনী, বিহারী অবাঙ্গালীদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করে রাজবাড়ীকে শত্রুমুক্ত করে।
যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল হাসান লালী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ, এসএম নওয়াব আলী ও গোলাম মোস্তফা গিয়াস জানান, রাজবাড়ীর বিভিন্নস্থানে ১৬ ডিসেম্বর বা তারও আগে শত্রুমুক্ত হলে রাজবাড়ী শহরে তখনও চলছে অবাঙ্গালী বিহারীদের সাথে মুক্তি বাহিনীর তুমুল যুদ্ধ। রেলের শহর হওয়াতে রাজবাড়ীতে বিহারী অবাঙ্গালীদের বসবাস বেশি ছিল। যে কারণে তারা রাজাকারদের যোগ সাজস ও পাক বাহিনীর সহায়তায় অস্ত্রসজ্জ নিয়ে শক্ত অবস্থানে ছিল। পড়ে রাজবাড়ীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্ময়ে অবাঙ্গালী বিহারীদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করে তাদের পরাজিত করেন ১৮ ডিসেম্বর। এর পরেই তারা বিজয়ের উল্লাস করেন। কিন্তু সেই সম্মুখ যুদ্ধে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
সদর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল জানান, রাজবাড়ীতে রেল কোলনী থাকার কারণে রাজবাড়ী শত্রুমুক্ত করতে দুই দিন সময় বেশি লেগেছে। পাক বাহিনীরা আত্মসমর্পণ করলেও রেল কোলনীর বিহারী অবাঙ্গালীরা আত্মসমর্পণ করে নাই। পড়ে রাজবাড়ীকে মুক্ত করতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তুমুল যুদ্ধ হয়। পড়ে ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে রাজবাড়ীকে শত্রুমুক্ত করা হয়।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়