৬ তলা থেকে ফেলে গৃহবধু লাকি হত্যার অভিযোগ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবীতে রাজবাড়ীতে মহিলা পরিষদের স্মারকলিপি প্রদান

- Update Time : ১১:২৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২
- / ৪৭ Time View

রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও রাজবাড়ী পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল হক অমি’র বিরুদ্ধে ছয় তলা থেকে স্ত্রী লাকি আক্তার (২৫) কে সড়কের পাশে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অভিযোগে মৃত লাকি আক্তারের মা মোছাঃ ইসমত আরা বেগম বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অস্বাভাবিক ভাবে লাকির মৃত্যুর ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়ে সোমবার বিকালে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজবাড়ী জেলা শাখা।
জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি পূর্ণিমা দত্ত, সাধারণ সম্পাদক ক্রিস্টিনা মারিও রেখা ও লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেহেনাজ পারভীন সালমা স্বাক্ষরিক ওই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, লাকির মৃত্যু অস্বাভাবিক। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মৃত লাকির মা’র দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ১০ বছর পূর্বে অমি’র সাথে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে জান্নাত (৮) নামে এক মেয়ে ও রাইয়ান (৩) নামে অপর এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর অমি নেশা করার পাশাপাশি পরনারীর প্রতি আসক্ত হয়। মদ পান করে গভীর রাতে বাড়ী ফিরে লাকিকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতো। এ সব বিষয় নিয়ে পারিবারিক শালিশ হলেও লাকি তার সন্তানদের কথা ভেবে নিযাতন উপেক্ষা করেই রাজবাড়ী বাজারের বিনোদপুর এলাকার রাশা টাওয়ার খোরশেদ প্লাজায় বসবাস করে আসছিলো। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে অমি অসৎ লোকদের কু পারামর্শে ও সহযোগিতায় পরকীয়া প্রেমে জড়িত হয়ে ও যৌতুকের দাবীতে লাকিকে মারপিট করে হত্যার উদ্দেশ্যে ওই ভবনের ছয় তলা থেকে সামনের সড়কের ফুটপাতের উপর ফেলে দেয়। তাকে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
প্রত্যক্ষদর্শী শেখ সাদি জানিয়েছেন, তিনি দোকান বন্ধ করে রাতে বাসায় ফিরছিলেন। সে সময় ওই ভবনে ঝগড়ার শব্দ পান তিনি। এর কিছু সময় পর উপর থেকে কিছু একটা পড়ার শব্দ পান তিনি সহ উপস্থিত কয়েকজন। তারা এগিয়ে গিয়ে দেখন লাকির দেহ সেখানে পরে আছে। তবে কোন রক্তাক্ত জখম ছিলো না লাকি। ওই সময় ভবন থেকে এসে কয়েকজন লাকিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে রাশেদুল হক অমি জানান, ঝগড়া হয়েছে এ কথা সত্য। তবে ওই ঝগড়ার পর তিনি বাথরুমে যান। বাথরুম থেকে বের হয়ে তিনি লাকিকে বাসার রুম গুলোতে খোজাখুজিও করেন। পরবর্তীতে দেখা যায় লাকি ছয় তলা থেকে লাফিয়ে নিচে পরে আছে।
রাজবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, লাকির মরদেহ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাবার পর বলা সম্ভব হবে লাকি আত্মহত্যা করেছে না কি তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় লাকির মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলো, রাশেদুল হক অমি, অমি’র বড় ভাই মোঃ মাসুদুল হক, বোন আফরোজা খাতুন ও মা মমতাজ বেগম। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়