করোনা ইউনিট থেকে বের হলে মানুষ ভিন্ন চোখে তাকায়: করোনা ইউনিটের স্টাফ নার্স মামুনের অভিজ্ঞতা –

- Update Time : ১০:৪২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মে ২০২০
- / ৩৭ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
জেলার প্রতিটি উপজেলায় আইসোলেশন কর্ণার খোলা হলেও মুলত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) প্রতিরোধে খোলা আইসোলেশন ইউনিটটিই জেলায় মূখ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। এই ইউনিটের ইনচার্জের দায়িত্বে রয়েছেন সদর হাসপাতালের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি জানালেন, এখনও রাজবাড়ীবাসী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের ভিন্ন চোখে দেখছে। এমনকি যারা করোনা রোগির চিকিৎসা করছেন তাদের দিকেও ভিন্ন দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে সাধারণ মানুষ, যেন তারা ভিন গ্রহ থেকে এসেছেন। এই দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন চেয়ে মামুন বলেছেন, ‘এই রোগ ছোঁয়াচে, আজ একজনের হয়েছে কাল অন্যজনের হবে।’ ফলে কাউকে ভিন্ন দৃিষ্টিতে না দেখার আহ্বান তার। তার মতে, সাবধানতা অবশ্যই প্রয়োজন তবে তার জন্য করোনা রোগি কিংবা করোনা চিকিৎসক ও নার্সদের ঘৃণা করা উচিত নয়। কেননা, শেষ পর্যন্ত তারাই তো চিকিৎসা দিচ্ছেন।
তিনি জানান, গত ২৩ মার্চ থেকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) প্রতিরোধে খেলা আইসোলেশন ইউনিট খেলা হয়। শুরু থেকেই এই ইউনিটের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। কোরানা পজেটিভ রোগিদের কেস ষ্টোরি লিপিব্ধ করা থেকে শুরু করে তাদের দেখভালো করার কাজ গুলো নিবেদিত ভাবে করছেন তিনি। ওই দিন থেকে তিনি অবস্থান করছেন হাসপাতালে, থাকছেন এবং খাওয়া-দাওয়াও সেখানে। হাসপাতাল থেকে বাসা ৫ মিনিটের পথ হলেও গত ২৩ মার্চের থেকে সহধর্মিণী রেহেনা পারভীন, কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আফসানা বিনতে মামুন এবং নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে সিরাজুম মনির সিনহা’র সাথে দেখা হয়না তার। শুধুই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ।
করোনাকালে অভিজ্ঞতা বর্ননা করতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের মেডিসিন ও কার্ডিওলোজির জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ শামিম আহসান কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) প্রতিরোধে খোলা আইসোলেশন ইউনিট প্রধান হিসেবে নিযুক্ত আছেন। করোনা পজেটিভ কোন রোগি হাসপাতালে এলেই শামিম আহসানের নেতৃত্বে দায়িত্ব প্রাপ্ত অন্যান্য চিকিৎসকরা অত্যান্ত নিবেদিত ভাবে কাজ শুরু করেন। সেই সাথে অত্যান্ত ঝুকি নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন, হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান নন্দ দুলাল ও শহিদুল ইসলাম। এই ইউনিটে তাদের সাথে আরো ১২ জন নার্স রয়েছেন। ওই সব নার্সরাও ১২ ঘন্টা সিফটে কাজ করে থাকছেন হাসপাতালে।
তিনি বলেন, করোনা পজেটিভ রোগিদের দেখ ভালো করা অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার। এতে করে অনেক ত্যাগ তাদের করতে হচ্ছে। সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো, করোনা রোগিদের দেখভালো করে আইসোলেশন ইউনিট থেকে বাইরে বের হয়ে এলে ‘তাদের দিকে মানুষ অন্যরকম দৃষ্টিতে তাকায়।’
তিনি বলেন, মানুষের আচরণ দেখে মনে হয় তারা অন্য গ্রহ থেকে এসেছেন। কত দ্রুত সেখান থেকে দুরে সরে যাবেন সে চেষ্টাই করেন। আচরণও থাকে তাদের অন্যরকম।’
অথচ এই আমরা সংসার সন্তান ফেলে, জীবনের সবচেয়ে বেশি ঝুকি নিয়ে করছি করোনা রোগিদের সেবা। তাদের সেবার কারণে ইতোমধ্যেই এ হাসপাতাল থেকে ৫ জন করোনা রোগি সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন। বর্তমানে যে ৫ জন ভর্তি আছে তাদেরও দেখভালো করছেন তারা নিবেদিত ভাবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়