কঠোর লকডাউনের মধ্যেও দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ –
- Update Time : ১১:১০:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুলাই ২০২১
- / ১৭ Time View
শামীম শেখ, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিন রবিবারও মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে দেশের অত্যন্ত ব্যাস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া -পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় ঘাটে অনেকটা ফাঁকা অবস্থায় ফেরিগুলোকে দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা -উপজেলা থেকে বিভিন্ন উপায়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা সাধারন যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। এ সময় ঘাট সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান,রাতের বেলায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরো বেশি থাকে। সরেজমিন রবিবার বেলা ১২ টা হতে ২ টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা যায়।
জানা যায়, কঠোর বিধি-নিষেধের তৃতীয় দিন রবিবার ভোর থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ঢাকামুখি যাত্রীদের চাপ সৃষ্টি হয়। এ সকল যাত্রীরা মোটরসাইকেল, অটোরিক্সা, থ্রীহুইলাসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভেঙে ভেঙে দৌলতদিয়া ঘাটে আসেন। অনেক যাত্রীকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে পায়ে হেটে ফেরি ঘাটে পৌছাতে দেখা যায়।
এক্ষেত্রে তাদেরকে পথে পথে পুলিশের বাঁধা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এছাড়া ঘাটে পৌঁছানোর পরও তারা ম্যাজিস্ট্রেটের জেড়ার মুখে পড়ছেন।
এদিকে জরুরি পারাপারের জন্য বিআইডব্লিউটিসি কতৃপক্ষ দৌলতদিয়া -পাটুরিয়ার এ নৌরুটে ৯ টি ফেরি চালু রয়েছে। একেকটি ফেরি ঘাটে পৌছানো মাত্রই আগে থেকে ঘাটে জমে থাকা যাত্রী ও যানবাহন ফেরিতে উঠার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করে দেয়। এ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি।
বেলা সাড়ে ১২ টায় দৌলতদিয়ার ৬ নং ঘাটে দেখা যায়, হাসনাহেনা নামের একটি ছোট ফেরি কয়েকটি জরুরি যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।এ সময় ওই ঘাটে ঢাকামুখি শতাধিক অপেক্ষমান যাত্রী ফেরিতে উঠার চেষ্ট করলেও সেখানে উপস্হিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল ইসলাম অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যাতিত সকলকে আটকে দেন।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার দেশ ও দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে।এটা আমাদের সকলকে মেনে চলা উচিত। পরে পাশের ৫ নং ঘাটে আসা রোরো ফেরি ভাষা শহীদ বরকত যোগে যাত্রীরা নদী পার হন।
কুষ্টিয়া হতে মোটরসাইকেল যোগে আসা মাহাবুব আরম (টিটু) জানান,তিনি ঢাকায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক। কোরবানি দিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন।আজ ঢাকায় ফিরছি।কিন্তু ৬ নং ফেরিঘাটে ম্যাজিস্ট্রেট আটকে দেন।পরে ৫ নং ঘাটে আসা অন্য একটি ফেরিতে নদী পার হন।
মাগুরার মুহম্মদপুর হতে আসা খায়রুজ্জামান বলেন, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। রোববার থেকে তার অফিস খুলেছে। কিন্তু আমি যেতে পারিনি।বসকে বলে কয়ে মানিয়েছি।সোমবার হতে অফিস করতেই হবে।তাই কঠোর লকডাউনের মধ্যে অনেক ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি।
যশোর হতে আসা ইকবাল হোসেন বলেন,তিনি ঢাকায় একটি টেলিকম কোম্পানিতে চাকরি করেন।চাকরি রক্ষার জন্য ভোর ৬ টায় যশোর হতে রওনা দেই।বিভিন্ন ছোট ছোট গাড়িতে, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তিনি বেলা ১ টা নাগাদ দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছান।তবর এসেই ফেরির দেখা মেলে।জানি না পাটুরিয়া ঘাট থেকে কি ভাবে ঢাকায় পৌছাব।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে থানা পুলিশ মহাসড়ক ও দৌলতদিয়া ঘাটের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, নৌরুটে ছোট-বড় মিলে মোট ১৬ টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে জরুরি পারাপারের জন্য ৯ টি ফেরি চালু রেখে অবশিষ্ট ৭ টি ফেরি ঘাটে বেঁধে রাখা হয়েছে। চালু ফেরিগুলো ঘাটে আসা জরুরি যানবাহন ও যাত্রীদের পারাপার করছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়