করোনাকালে করণীয় ও বর্জনীয়: আব্দুর রশিদ মন্ডল –

- Update Time : ০৭:০৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০২০
- / ৫৮ Time View
আপনার বহুল প্রচারিত অনলাইন পোর্টাল ” রাজবাড়ী বার্তায় ” অনেক সৌখিন লেখক খুব সুন্দরভাবে মনের ভাব প্রকাশ করেছেন তা পড়ার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই শোৌখিন লেখকদের মধ্যে অনেকে একদিন জাতলেখক হবেন, সেই প্রত্যাশা রেখেই আমার মত নেহায়েত ক্ষুদ্র মানুষের সামান্য কিছু ভাবনা শেয়ার করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুনা। ভাবনা ও লেখার মধ্যে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। ভাবনা ব্যাকরণহীন কিন্তু লেখা সাধারণত ব্যাকরণ সমৃদ্ধ হতে হয়।
আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিতে যেদিন (৮/৩/২০২০ খ্রি.) একত্রে তিনজন করোনা রোগী প্রথম সনাক্ত হয় তা জানার সুযোগ হয়েছিল দৈনিক কালেরকণ্ঠ অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে। তারপর থেকে আমরা হারালাম আমাদের চলার পথের স্বাভাবিক ছন্দ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টিং মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের জানার সুযোগ হলো প্রতিমুহূর্তে আমাদের কী করণীয় বা বর্জনীয়, যেমন সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, হ্যাণ্ডশেক ও কোলাকুলি হতে দুরে থাকা, মাস্ক ব্যবহার করা, সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত পরিষ্কার করা, জনমাগম বা ভীড় এড়িয়ে চলা ইত্যাদি। এছাড়া সাথে ছিল কিছু নতুন শব্দের সাথে পরিচয় ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করা যেমন হোমকোয়ারেন্টাইন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন, লক ডাউন ইত্যাদি। আমাদের মত আত্মসচেতনহীন জনগণের শব্দগুলো বোঝাতে বা মানাতে পুলিশবাহিনীসহ অনেকের বেগ পোহাতে হচ্ছে। এর মধ্যে লক ডাউন শব্দটি মানানো বা বোঝানো তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রের জন্য বেশ কঠিন। কারণ আমাদের দেশে দিন আনা দিন খাওয়া (ঐধহফ ঃড় সড়ঁঃয) লোকের সংখ্যা একেবারে কম নয়। ফলে আমাদের রিকশা শ্রমিক, মোটর শ্রমিক, হোটেলবয়, দিনমজুর পোষাকশ্রমিকসহ অনেকে কর্মহীন হয়ে বড়ই কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। করোনা বিস্তার রোধে লক ডাউনের চাইতে ভাল পন্থা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভাল উপায় বলে সবার ধারণা।
এই বৈশ্বিক করোনাযুদ্ধে আমাদের দেশে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব সাহায্য সহযোগিতা এসেছে তা যথাস্থান ও যথাসময়ে পোঁছানোই ছিল চ্যালেঞ্জ , যেটা আমরা মিডিয়ার কল্যাণে দেখেছি। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তবে তা অভাবের তুলনায় অপ্রতুল। এই দুর্দিনে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব যার যার সামর্থ্যানুযায়ী এই অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো। জগদ্বিখ্যাত ভূপেন হাজারীকার সেই বিখ্যাত গানের কথা মনে পড়ে? ” মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য এতটুকু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা হে বন্ধু.. “
এবারের ঈদ পালনকালে সবার মুখে একটি কমন কথাশোনা গেছে ” এমন ঈদ যেন আর কখনও পালন করতে না হয়,হে মাবুদ”। তবে এই ঈদে যেভাবে কিছু মানুষ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে ঈদ করতে এসেছিলেন, তাদেরকে মানুষ ভাল চোখে নেয়নি।
করোনাকালীন যেসব ব্যক্তি (ডাক্তার, পুলিশ,রাজনীতিবিদ, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক প্রমুখ) ইতোমধ্যে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তাদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। সর্বোপরি যদি বেঁচে থাকি ইতিহাসের সাক্ষী হিসাবে ১৯৭১ সালের একজন মুক্তিযোদ্ধার মত পরবর্তী প্রজন্মের নিকট অবলীলায় বলতে পারব করোনাকালীন কার কী ভূমিকা ছিল।
এই যুদ্ধে জয়ী হতে নিজের সুরক্ষা নিজেকেই নিশ্চিত করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে মঙ্গল করুক, আমিন।
লেখক- আব্দুর রশিদ মন্ডল, সহকারী অধ্যাপক, রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজ, রাজবাড়ী।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়