কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হলেন রাজবাড়ীর এমপি কাজী কেরামত আলী-
- Update Time : ০৯:৫৭:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০১৮
- / ১৫ Time View
জাহাঙ্গীর হোসেন, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করেন, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কাজী কেরামত আলী। তাকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় কাজী কেরামত আলী “রাজবাড়ী বার্তা ডট কম”কে জানান, আজ দুপুরে তিনিসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা রাজধানী ঢাকার ৩২ নম্বরের বাড়ীতে থাকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পন করেন। সে সময় রাজবাড়ীর আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠন এবং ঢাকায় অবস্থানরত রাজবাড়ীর তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় তিনিসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা মাওয়া ঘাট হয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। তারা বঙ্গবন্ধু’র কবর জিয়ারত করবেন। কবর জিয়ারত শেষে পুনঃরায় মাওয়া ঘাট হয়ে রাজধানী ঢাকায় ফিরে যাবেন। বাবা কাজী হেদায়েত হোসেন এবং মা মনাক্কা বেগম-এর কবর জিয়ারত করতে তিনি আগামী শনিবার রাজবাড়ীতে আসবেন। ওই দিন বিকালেই তিনি ঢাকায় ফিরে যাবেন এবং পরদিন রবিবার সকালে তিনি প্রথমবারের মত যাবেন মন্ত্রনালয়ে। ওই দিন থেকেই শুরু করবেন তিনি অফিস।
তিনি আরো বলেন, রাজবাড়ী জেলার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।
রাজবাড়ী বাজারের বৃদ্ধ ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজবাড়ীতে মন্ত্রী অথবা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাউকে পাওয়া যায়নি। এবারই প্রথম আওয়ামীলীগ সরকার রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি কাজী কেরামত আলীকে প্রতিমন্ত্রী করলেন। এটা সর্বদা উন্নয়ন বঞ্চিত রাজবাড়ী জেলার জন্য গর্বের ও আনন্দের ব্যাপার।
রিকশা চালক আবুল কালাম বলেন, এমপি কাজী কেরামত আলী সাধারণ মানুষের মত চলা ফেরা করেন। তিনি চার বার বিজয়ী এমপি হলেও তার মধ্যে অহমিকা ভাব নেই। যে কোন সাধারণ মানুষ তার কাছে যেতে পারেন। তিনি কখনো খালি হাতে কাউকে ফেরান না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন বিচক্ষণ মানুষ। তা না হলে এমন সাদাসিধে মানুষকে এভাবে মূল্যয়ন করতেন না। তিনি শুধু রাজবাড়ীর নয় সারা দেশের মানুষের কল্যানে সুন্দর ভাবে কাজ করনেন এটাই তার কামনা।
বাদাম বিক্রেতা জিন্না ফকির বলেন, টিভিতে এমপি কাজী কেরামত আলীর শপথ গ্রহণের দৃশ্য দেখেছি। অন্যারা যা করেননি, আমাদের এমপি সে কাজটি করেছেন। তিনি শপথ গ্রহণের আগে পা’য়ে হাত দিয়ে মাননীয় রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদকে সালাম করেছেন। রাষ্ট্রপতিও তার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেন। পরে রাষ্ট্রপতি তার শপথ বাক্য পাঠ করান। এটা আমাদের রাজবাড়ী বাসীর জন্য গর্বের।
জেলা জাতীয় পাটি সভাপতি এ্যাডঃ খোন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্ছু ও সাধারণ সম্পাদক মোকছেদুর রহমান খান মোমিন, দীর্ঘ দিন পরে হলেও রাজবাড়ীতে একজন প্রতিমন্ত্রী পাওয়া গেল। বিষয়টি অত্যান্ত আনন্দের। এতে রাজবাড়ীর উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তারা এমপি কাজী কেরামত আলীকে অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন জানান, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাডঃ খান মোঃ জহুরুল হক, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি অশোক বাগচি, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ্ত চক্রবর্তী কান্ত, হিন্দুবোদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব কর্মকার, রোটারী ক্লাব অফ রাজবাড়ী চন্দনার সভাপতি ডাঃ পারিজাত কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শিশু ও গবেষনা পরিষদেও সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ বিজোন বোস।
জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বার এসোসিয়েশনের সভাপতি এ্যাডঃ গণেশ নারায়ন চৌধুরী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাজবাড়ীর বাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী পূরণ হতে যাচ্ছে। যা এ জেলাবাসির জন্য অত্যান্ত আনন্দের ও গর্বের। তিনি আশা করেন এমপি কাজী কেরামত আলীর নেতৃত্বে দল ও সরকার সু-সংহত হবে।
কাজী কেরামত আলীর ভাতিজা জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী রকিবুল হোসেন শান্তনু নব্য শপথ নেওয়া প্রতিমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, রাজবাড়ী ছোট্ট ও অবহেলিত জেলা। এ জেলা থেকে প্রথম তার চাচা কাজী কেরামত আলীকে প্রতিমন্ত্রী করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান এবং অভিনন্দন জানান কাজী কেরামত আলীকে। কাজী কেরামত আলীর বাবা কাজী হেদায়েত হোসেন ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রাক্তন গণপরিষদ সদস্য, রাজবাড়ী পৌরসভা সাবেক চেয়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগের তৎকালীন রাজবাড়ী আঞ্চলিক জোনের সাধারন সম্পাদক। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। ইতিহাসের জখন্যতম ওই হত্যাকান্ডের পর ঘাতকরা থেমে যায়নি। তারা বঙ্গবন্ধু’র সহযোদ্ধাদেরও খুজে বের করার পাশাপাশি তাদেরকে হত্যার চেষ্টায় লিপ্ত হয়। যার ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাত্র তিন দিনের মাথায় ১৮ আগষ্ট প্রকাশ্য গুলি করে হত্যা করে কাজী হেদায়েত হোসেনকে। ১৯৭৫ সালের ১৮ আগষ্ট দূর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেন। চাচা কাজী কেরামত আলী ৭ ভাই ৪ বোনের মধ্যে সবার বড়। আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৯২ সালের উপ-নির্বাচনে রাজবাড়ী ১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, এর পর একে একে চার বার এমপি হন। জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করায় প্রধানমন্ত্রী তাকে প্রতিমন্ত্রী করেছে। আওয়ামী লীগ কথা দিয়ে কথা দিয়ে কথা সেটা দেরিতে হলেও কাজী কেরামত আলীকে মন্ত্রী করার মাধ্যমে আজ প্রমানিত হলো। তিনি তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করেন এবং দলীয় নেতাকর্মী ও জেলা বাসীকে সাথে নিয়ে তিনি রাজবাড়ীর উন্নয়নে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
উল্লেখ্য, এ্যাডঃ ওয়াজেদ আলী চৌধুরীর ইন্তেকালের পর ১৯৯২ সালের উপ-নির্বাচনে কাজী কেরামত আলী প্রথম বারের মত রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়, ২০০১ সালে বিএনপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং ২০১৪ চতুর্থ বারের মত নির্বাচিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের এমপি নির্বাচিত হবার পর তাকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সরকারী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে অধিভুক্ত হন। একই সাথে তিনি দীর্ঘ ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়