স্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও ‘ঘুষ না দেয়ায়’ প্রতিবন্ধী শেখ ইয়াছিন পাচ্ছে না পেনশন সুবিধা !
- Update Time : ০৯:০০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
- / ২১৫ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
‘ঘুষ না দেয়ায়’ পারিবারিক পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন না প্রতিবন্ধী শেখ ইয়াছিন। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি কোন সুফল। শেখ ইয়াছিন রাজবাড়ী জেলা শহরের শ্রীপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখের ছেলে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক স্বপন কুমার খা’র ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর ডিস্ট্রিক একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার একটি পত্র পাঠান। ওই পত্রে বলা হয় প্রতিবন্ধী শেখ ইয়াছিনের বাবা মৃত আব্দুর রাজ্জাক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর প্রাক্তন পিয়ান এবং চাকুরিরত অবস্থায় ১৯৭৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুরপর স্ত্রী ফুলজান বেগম ২০২১ সালের ২৮ মার্চ পর্যন্ত পারিবারিক পেনশন ভোগ করেন। উত্তরাধীকারীদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাকের ৫ ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের মধ্যে তৃতীয় পুত্র শেখ ইয়াছিন প্রতিবন্ধী নীতিমালা অনুযায়ী পারিবারিক পেনশন পাবার আবেদন করেন। যা ২০২২ সালের ২২ আগষ্ট এক পত্রের মাধ্যমে মঞ্জুরী দেয়া হয়। ওই পত্রের বিপরীতে রাজবাড়ীর ডিস্ট্রিক একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার আপত্তিসহ ফেরৎ পাঠায়। পরবর্তীতে আপত্তির সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধী কার্ড, ডাক্তারী সনদ ও সকল প্রকার কাগজপত্রসহ তৃতীয় বারের মত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক স্বপন কুমার খা রাজবাড়ীর ডিস্ট্রিক একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারকে শেখ ইয়াছিনে অনুকুলে পেনশন মঞ্জুর করতে নির্দেশ দেন।
প্রতিবন্ধী শেখ ইয়াছিন বলেন, তিনি এ পেনশন সুবিধা পেতে তিনি রাজবাড়ীর ডিস্ট্রিক একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার শাহ্ মোঃ মহশীন রেজার কাছে একাধিকবার যান। শাহ্ মোঃ মহশীন রেজা তার কাছে মোটা ঘুষ দাবী করেন। তিনি ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় শাহ্ মোঃ মহশীন রেজা ও তার অফিসের সংশ্লিষ্ঠ কয়েকজন কর্মচারী ক্ষিপ্ত হন। তারা তাকে নানা রকম কুটকথা বলে অফিস থেকে বের করে দেন। এ ঘটনার পর তিনি গত ১৫ মার্চ শাহ্ মোঃ মহশীন রেজাকে লিগ্যাল নোটিশ দেন। ওই লিগ্যাল নোটিশের জবাবে গত ২০ মার্চ শাহ্ মোঃ মহশীন রেজা জানান, বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধানের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে শাহ্ মোঃ মহশীন রেজা তাকে জানিয়েছেন, যেহেতু মৃত্যুর আগে তার বাবা তাকে প্রতিবন্ধী হিসেবে সনাক্ত করে যান নি, সে কারণে তাকে আর পেনশন সুবিধা দেয়া সম্ভব নয়।
শেখ ইয়াছিন আরো বলেন, বিষয়টি জানিয়ে গত ৬ এপ্রিল রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেও সুফল পাননি। যে কারণে সকল ঘটনা জানিয়ে তিনি পুনরায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বদলী হয়ে যাওয়া রাজবাড়ীর ডিস্ট্রিক একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার শাহ্ মোঃ মহশীন রেজা জানিয়েছেন, তিনি শেখ ইয়াছিনের কাছে তিনি কোন ঘুষ দাবি করেন নি। তাকে সরকারি কর্মচারীগণের পেনশন সহজীবরণ আদেশ,২০২০ -এর ৭নং শর্তাবলী “কর্মচারীর প্রতিবন্ধী সন্তানের পেনশন প্রাপ্যতার বিষয়ে উক্ত কর্মচারীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলিয়া গন্য হইবে” বিষয়টি জানানো হয়। তবে তিনি এ নির্দেশনার সঠিক উত্তর দিতে পারেন নি।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়