রাজবাড়ীর মূলঘরে ভিজিডি প্রকল্পে সঞ্চয়ের টাকা গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ
- Update Time : ০৯:১২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩
- / ১২৬ Time View
ইমরান হোসেন মনিম, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী জেলা সদরের মূলঘর ইউনিয়নে ভিজিডি চাল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভিজিডি চাল বিতরনে সরকারী সঞ্চয় হিসেবে ২২০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও ৩০ টাকা বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা করে।
চলতি বছর জেলার ৪২ টি ইউনিয়নে হত দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে ২ বছর মেয়াদী নতুন তালিকাভুক্ত করে উপকারভোগীদের মাঝে চাল বিতরন শুরু করা হয়।
মূলঘর ইউনিয়নে জানুয়ারী,ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসের চাল বিতরন করা হয়। প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পায় কার্ডধারী উপকার ভোগীরা।কিন্তু এ চাল বিতরনে উপকার ভোগী দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ২২০ টাকা সঞ্চয় জমা করা হয়। অথচ ২২০ টাকার স্থলে ২৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে প্রত্যেক উপকারভোগী গ্রাহকের কাছ থেকে। শুধু একজনের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৩০ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে।আর গ্রাহক বাধ্য হয়ে এ অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে আসছে।উপকারভোগীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান ২২০ টাকা সঞ্চয় জমা নেয়ার কথা থাকলেও ইউনিয়নে মাসের চাল আনতে গেলেই তারা ৩০ টাকা করে বেশি নেয়, অতিরিক্ত ৩০ টাকা চাল আনার খরচ(পরিবহন খরচ) নেয় বলে জানান তারা।
আবার অনেক গ্রাহক বলেন ৩০ টাকা কেন বেশি নে তা আমরা জানিনা। কিন্তু আমরা ২৫০ টাকা দেই সঞ্চয় বইতে ২২০ টাকা জমা করা হয়।আমরা কি করব চেয়ারম্যান, সচিব এবং আরো কয়েকজন যারা টাকা জমা নেয় সবাই জানে বেশি টাকা নেওয়ার কথা।মূলঘর ইউনিয়নে ভিজিডি গ্রাহকের সংখ্যা ১৬৪ জন। প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ টাকা হারে বেশি নেওয়ায় মোট ৭ হাজার ৯ শ ২০ টাকা বেশি নেওয়া হয় অসহায় দরিদ্র এসব মানুষের কাছ থেকে। যদি অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া বন্ধ না হয় তাহলে বছরে ৯৫ হাজার ৪০ টাকা বেশি নেওয়া হবে গ্রাহকদের কাছ থেকে।আর দুই বছরে প্রায় দুই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করা হচ্ছে।মাসিক ২২০ টাকা আগামী দুই বছর পর গ্রাহক এক সাথে উত্তোলন করতে পারবে জমাকৃত ব্যাংক থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে মূলঘর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। চাল বিতরনের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাকে চাল বিতরনের বিষয়টি জানাননি।
মূলঘর ইউনিয়নের বাঘিয়া গ্রামের লোকমান শেখের স্ত্রী ভিজিডি উপকারভোগী জুলেখা বেগম বলেন,আমি এ পর্যন্ত তিনবার চাল নিয়েছি আমার কাছ থেকে প্রতিবারই ২৫০ টাকা করে নিয়েছে। কিন্তু আমার সঞ্চয় বইতে ২২০ টাকা জমা করেছে চাল দেওয়ার সময়।তার মত আরো একজন গ্রাহক বালিয়াডাঙ্গীর শান্তি আক্তার ভিজিডির চাল নিতে আসেন,কিন্তু প্রতিবারই তার কাছ থেকে ২২০ টাকার সাথে অতিরিক্ত ৩০ টাকা তারা চালের খরচ নেয় বলে জানান তিনি। এ ইউনিয়নের গ্রাহক ছালেহা বেগম, খোদেজা বেগম, বাঘিয়ার ইব্রাহিম শেখ সহ আরো অনেক গ্রাহক ভিজিডি চাল আনতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে মূলঘর ইউনিয়ন সচিব আব্দুস সাত্তার বলেন,আমি চাল বিতরন করছিনা।চেয়ারম্যা নিজেই চাল বিতরন করেন,টাকা বেশি নেয় কিনা আমি জানি না।
মূলঘর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শেখ মো. ওহিদুজ্জামান’কে ভিজিডি চাল বিতরনে সঞ্চয় ২২০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও ৩০ টাকা বেশি নিচ্ছেন কেন এমন প্রশ্নে তিনি প্রথমে বেশি টাকা নেওয়ার কথা, অস্বীকার করলেও, পরে তিনি আগের যে চেয়ারম্যান বেশি টাকা নিতেন,সেই ধারাবাহিকতায় টাকা নেওয়ার কথা জানান।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মার্জিয়া সুলতানা বলেন, কোন যুক্তিতে,কার নির্দেশনায় চেয়ারম্যান ভিজিডি গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন, এটা সম্পূর্ণ বে-আইনী। আগামীকাল চেয়ারম্যানকে ডেকে এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়