রাজবাড়ীর এসপি’র দিক নির্দেশনায় ২০ দিনেই উদ্ঘাটন হলো পাংশার বাবু মামলার রহস্য-
- Update Time : ০১:১৩:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ ২০১৮
- / ১৯ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
ডলার ব্যবসার নামে ৫ লক্ষাধিক টাকা আতœসাৎ করতে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চালক বাবু খন্দকার (২৫) কে সুকৌশলে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত দুরশুন্দিয়া মাঠের একটি পেয়াজ ক্ষেতের মধ্য এনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই সাথে লাশ গুম করারও প্রচেষ্টা চালানো হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নাছিমা তালুকদার মুনমুনের আদালতের কাছে এমনি তথ্য দিয়েছে ওই হত্যাকান্ডের ২০ দিন পর গ্রেপ্তার হওয়া পটুয়াখালী জেলার দশমিনার আউলিয়াপুর গ্রামের মৃত হাসেম সরদারের ছেলে শাজাহান সরদার (৪৫)। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলির দিক নির্দেশনায় মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই উদ্ঘাটন হলো এই হত্যার রহস্যা।
ওই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাজবাড়ীর পাংশা এসআই শাহীন মোল্লা জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারী সকালে জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের দুরশুন্দিয়া মাঠের একটি পেয়াজ ক্ষেতের মধ্য থেকে কুপিয়ে হত্যা করা অজ্ঞাত (২৫) এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেন তারা। ওই উদ্ধারের নয় দিন পর গত ২ মার্চ সকালে লাশের পরিচয় উদ্ঘাটন করা হয়। যুবকটির নাম বাবু খন্দকার, তার বাবার নাম সেকেন্দার খন্দকার। বাড়ী শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ব¤্রসর গ্রামে। সে সময় নিহত বাবুর ভাই জিতু খন্দকার জানিয়ে ছিলেন, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা চালাতো বাবু খন্দকার। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সে একটি ব্যবসা পরিচালনা করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। তবে কি ব্যবসা তা তারা জানতেন না। যার অংশ হিসেবে গত ২১ ফেব্রুয়ারী বাবু রাজধানী ঢাকা যান। ঢাকা থেকে তার সরাসরি কুষ্টিয়া হয়ে বাড়ী ফেরার কথা ছিলো। এর পর থেকেই তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। ফেসবুকে বাবুর ছবি দেখে তিনি পাংশা থানায় এসেন এবং লাশ শনাক্ত করেন। তবে কারা কি কারণে তার ভাইকে হত্যা করেছে এবং কিভাবেই বা লাশটি রাজবাড়ীর প্রত্যন্ত এলাকায় আসলো সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। অন্ধকারাচ্ছন ওই অবস্থায় রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) ফজলুল করিমের ঔকান্তিক প্রচেষ্টায় নিহত বাবু’র মোবাইল ফোনের কললিষ্টের মাধ্যমে ঘাতকদের সানাক্ত করণের চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে ঘাতকদের ফেসবুক আইডি উদ্ধার করা সম্ভব হলেও তা দেখতে পাওয়া যায় নারীদের নামে। এরই মাঝে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে সুকৌশলে ঘাতক শাজাহান সরদারকে গত মঙ্গলবার ভোরে রাজধানী ঢাকার কদমতলী এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গতকাল রাজবাড়ীর আদালতে সোর্পদ করা হয়। আদালতের কাছে শাজাহান জানিয়েছেন, তিনি রাজধানী ঢাকায় একটি রিকশা গ্যারেজেন মিস্ত্রি হিসেবে কজ করতেন। সেই সাথে কথিত ডলার ব্যবসাকারী চক্রের সাথে তার যোগাযোগ ছিলো। ওই চক্রের অন্যতম সদস্য ও শরিয়পুর জেলার নরিয়া থানার শিলংগার গ্রামের আজিজ সরদারের ছেলে খোরশেদ সরদার (৪০) নিহত বাবু খন্দকারের কাছ থেকে ডলারের ব্যবসার কথা বলে কয়েক দফায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই টাকা হাতিয়ে নিতে খোরশেদ হত্যার পরিকল্পনা করে বাবুকে। হত্যার পর তাকে এক লাখ টাকা দেবারও প্রতিশ্রুতি দেয় খোরশেদ। যার অংশ হিসেবে ডলার ব্যবসার কথা বলে তারা বাবুকে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত দুরশুন্দিয়া মাঠের মধ্যে নিয়ে আসে। তিনি বাবুর শরীরে একটি চাকু দিয়ে প্রথমে আঘাত করেন এবং ওই একই চাকু দিয়ে খোরশেদও বাবুকে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে। তারা বেলচা, হাতুরি, চাকুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে লাশের পাশে গর্ত করে তা গুম করার চেষ্টায়ও লিপ্ত হয়। তবে ভোরের আলো ফুটে ওঠায় তারা তা করেনি, বেলচাম হাতুরি ও চাকু ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে আতœগোপনে চলে যান।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) ফজলুল করিম জানান, তাদের প্রচেষ্টায় মাত্র ২০ দিনে মধ্যে বাবু হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সমর্থ হয়েছেন। সেই সাথে ঘাতক শাজাহান সরদারকে গ্রেপ্তার করা এবং শাজাহানের জবানবন্দি আদালতে রের্ডক করার কাজটি তারা করতে পেরেছেন। অপর ঘাতক খোরশেদ সরদারকেও তারা খুব শিঘ্রই গ্রেপ্তার পূর্বক আদালতে সোর্পদ করতে পারবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়