৭০ বছর বয়সেও থেমে নেই রাজবাড়ীর অমল পাল

- Update Time : ১১:৪৩:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
- / ১৩০ Time View
আব্দুল হালিম বাবু, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
বয়সকে দূরে ঠেলে দিয়ে সুনিপূণ দক্ষতায় প্রতিমা নির্মাণ কওে যাচ্ছেন ৭০ বছর বয়সী রাজবাড়ীর অমল পাল। কোন প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালে খানা থাকলেও তিনি নিঁখুত আকার দিয়ে তৈরি করছেন প্রতিমা। শুধু টাকার জন্য নয় প্রতিমা বানানোর নেশার কারণেই তিনি ছাড়তে পারছেননা কাজ। তবে এখন নতুনদের এ কাজে আসার তেমন একটা আগ্রহ নেই বলে তিনি জানান।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের বরাট বাজারের পাল পরিবারে জন্ম অমল পালের। জীবনে তেমন প্রাতিষ্ঠানিক কোন পড়ালেখা করতে পারেন নি। বাবার পেশাছিল প্রতিমা বানানো। বাবার সাথে থাকতে থাকতেই তিনিও হাতে কলমে শেখেন প্রতিমা বানানোর কাজ। মাত্র বিশ বছর বয়সেই তিনি বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এখনও তিনি থামেন নি।
আসন্ন দূর্গোৎসবকে ঘিরে জেলার সব শিল্পীরাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা নির্মাণে। অমল পালও পিঁছিয়ে নেই। সাতজন সহকারী নিয়ে ২২টি পূজা মন্ডপের প্রতিমা নির্মাণের কাজ করছেন অমল পাল। সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকার মধ্যে চুক্তিতে এসব কাজ করছেন তিনি।
রাজবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ি সার্বজনীন পূজামন্ডপে গিয়ে দেখাযায়, অমল পাল মন্ডপের প্রতিমা বানানোর কাজে ব্যস্ত আছেন। মন্ডপে দেবী দূর্গা, কার্তিক, গণেশ, স্বরস্বতীসহ বেশির ভাগ প্রতিমার মাটির কাজ শেষ। এখন চলছে রঙকরা। সাথে চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। কথা হয় অমল পালের সাথে।
অমল পাল বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে বাবার সাথে সাথে থেকে কাজ করা শিখেছি। এখন বয়স হয়েছে। আগের মত সময় দিয়ে কাজ করতে পারিনা। তারপরও দেবীদেও প্রতিমা বানানো আমার কাছে নেশা হয়ে গেছে। তাই কাজ ছাড়তে পারিনা। এবছর মোট ২২ টি প্রতিমা নির্মানের কাজ হাতে নিয়েছি। আষাঢ় মাস থেকে শুরু করেছি। আর মাত্র অল্পদিন বাকী পূজা শুরুর । তাই এখন দিনরাত ভরে কাজ করতে হচ্ছে। প্রায় বেশির ভাগমন্ডপের গঠন প্রণালীর কাজ শেষ। এখন বাকী রয়েছে রঙের আঁচর দেওয়া ও সাজসজ্জার কাজ।’
অমল পাল বলেন, ‘সাধারণত দুই ধরণের প্রতিমা নির্মিত হয়ে থাকে। একটা হলো সম্পূর্ণ মাটি দিয়ে করা। কাঁদা মাটি দিয়েই সব নকঁশাকরা। আরেকটা মাটির উপরে বিভিন্ন অলংকার দিয়ে করা হয়ে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার তিন ছেলে দুই মেয়ে। ছেলেরাও প্রতিমা নির্মাণের কাজ বেঁছে নিয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। আমরা যে টাকায় প্রতিমা বানাচ্ছি। সহকারিদের বেতন দিয়ে অল্পকিছু টাকা থাকে। এছাড়া সারা বছর এই কাজ থাকেনা। তখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। রাজবাড়ীত ২৫ থেকে ৩০জন প্রতিমা শিল্পী রয়েছেন। সবারই একই অবস্থা।’
জেলা পূজাউদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ি এ বছর জেলায় ৪৪১টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে সবগুলো মন্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলছে রং করা এবং সাজ সজ্জার কাজ।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়