রাজবাড়ীতে জেলা প্রশাসন ও সনাকের যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত
- Update Time : ০৪:১৩:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৭৪ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) রাজবাড়ী কর্তৃক “রাষ্ট্রের মূলধারায় তথ্য অধিকারের সংযুক্তি এবং সরকারি খাতের অংশগ্রহন নিশ্চিতকরণ ” এই প্রতিপাদ্যে নিয়ে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে র্যালী, আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এস শেষ হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক (ভাপ্রাপ্ত) সিদ্ধার্থ ভৌমিক এর সভাপতিত্বে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসকে কেন্দ্র করে একটি আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। টিআইবি সনাক কর্তৃক রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত ৬৬ টি সরকারী দপ্তর সমূহের উপর পরিচালিত একটি ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ।
সনাক সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন -এর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শরীফ আল রাজীব, উপ-পরিচালক সমাজসেবা রুবাইত ফেরদৌস, সনাক সভাপতি প্রফেসর মোঃ নুরুজ্জামান, উপ-পরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর আজমীর হোসেন, জেলা তথ্য কর্মকর্তা রেখা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ের সকল অফিস প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিআইবি এবং সনাকের তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ প্রচার এবং বাস্তবায়নে সহায়তার কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরুপ একটি সম্মাননা ক্রেস্ট জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব সিদ্ধার্থ ভৌমিক সনাক সভাপতি প্রফেসর মোঃ নুরুজ্জামান এবং টিআইবি এর এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ এর হাতে তুলে দেন। এরপর টিআইবি সনাকের ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষনের ভিত্তিতে হালনাগাদ থাকা ১৮ টি প্রতিষ্ঠানকে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক দপ্তর প্রধানদের হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব সিদ্ধার্থ ভৌমিক ।
আলোচনা সভায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৪:
টিআইবির পক্ষ যেসকল থেকে আহ্বান জানানো হয়-
সার্বজনীন তথ্য অধিকার, প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে টিআইবি নিন্মোক্ত সুপারিশমালা প্রস্তাব করছে বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমতের অধিকার নিশ্চিতের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এক্ষেত্রে সকল আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের মত কালো আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট জনগণের ওপর ডিজিটাল নজরদারী কাঠামো নিশ্চিহ্ন করতে হবে। তথ্য কমিশনকে অধিকতর কার্যকর করার স্বার্থে স্বচ্ছপ্রক্রিয়ায় যোগ্য ও দলীয় প্রভাবমুক্ত ব্যক্তিদের কমিশনার হিসেবে নিয়োগ প্রদানসহ এই সংস্থাটিকে সম্পূর্ণভাবে ঢেলে সাজাতে হবে। তথ্যপ্রকাশ ও তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার সহজলভ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯Ñ এর পরিপন্থি’ বিদ্যমান আইনসমূহ সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করতে হবে। নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থি বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে যথাযথ ধারণা ও তথ্য প্রদানে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কারিগরি ও অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং তথ্য প্রদানে আগ্রহ সৃষ্টির কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। তথ্য অধিকার আইনের অধিকতর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ, জনগণ ও গণমাধ্যমের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহারে সচেতনতা ও সক্ষমতা সৃষ্টির বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচার বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথ্য কমিশন ও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সকল সংস্থার নিজস্ব ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তথ্যপ্রকাশ ও প্রচারে প্রতিষ্ঠানসমূহের দক্ষতা ও সংগতি পর্যবেক্ষণের জন্য তথ্য কমিশনের ক্ষমতা ও তদারকি বাড়ানোসহ তদারকি কার্যক্রমে নাগরিক সমাজ ও জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে; তথ্য অধিকার নিশ্চিতে গণমাধ্যমকে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ, সুশীল সমাজ, তথ্য কমিশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। ‘‘জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন, ২০১১’’ এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারি মিথ্যাচার এবং এ লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় সংস্থার অনৈতিক ব্যবহার চিরতরে বন্ধ করতে হবে এবং বস্তুনিষ্ঠ, সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতে কার্যকর নীতি-কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়