রাজবাড়ীর মুকুন্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ
- Update Time : ১০:২৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪
- / ২৪২ Time View
module:1facing:0; ?hw-remosaic: 0; ?touch: (-1.0, -1.0); ?modeInfo: ; ?sceneMode: Auto; ?cct_value: 6218; ?AI_Scene: (6, -1); ?aec_lux: 199.73528; ?hist255: 0.0; ?hist252~255: 0.0; ?hist0~15: 0.0; ?module:1facing:0; hw-remosaic: 0; touch: (-1.0, -1.0); modeInfo: ; sceneMode: Auto; cct_value: 6218; AI_Scene: (6, -1); aec_lux: 199.73528; hist255: 0.0; hist252~255: 0.0; hist0~15: 0.0;
ইমরান হোসেন মনিম, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী জেলা সদরের পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের মুকুন্দিয়া উচ্চ-বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর তরিঘরি করে কোন নোটিশ না করেই এক দিন মধ্যেই নিয়ম না মেনে ম্যানজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরিফ মো. জিল্লুর রহমান।
সভাপতি নির্বাচন বন্ধ করে সকল সদস্যদের উপস্থিতি ও মতামতের মাধ্যমে পূনঃনির্বাচন দিয়ে সভাপতি নির্বাচন করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক বরাবর আবেদন করেছেন এ স্কুলের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পারুল আক্তার।
নির্বাচনে সকল অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সবার মতামত নিয়ে সভাপতি নির্বাচন করার কথা থাকলেও সব অভিভাবকদের উপস্থিত না রেখেই ও মতামত না নিয়ে কাজী শামসুল হক নামে একজনকে সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এর আগে বেশিরভাগ সদস্যদের উপস্থিতির দিনে না জানিয়ে গোপনে সিগনেচার নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে প্রদান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তরিঘরি করে মিটিং না ডেকেই একদিনের মধ্যে সভাপতি নির্বাচন করে রেজুলেশন তৈরী করে অনুমোদনের জন্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাঠান প্রধান শিক্ষক। শিক্ষক প্রতিনিধি তিন জনের মধ্যে দুই জনের সিগনেচার নেওয়া হয় ও অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে সংরক্ষিত সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি দুইজনকে সভাপতি নির্বাচনের দিনে ডাকেননি এবং তাদের সিগনেচার না নিয়েই সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এখানে বড় একটি কারন হিসেবে ওই শিক্ষক জানান আগামী কিছুদিনের মধ্যে স্কুলে বড় একটি নিয়োগ রয়েছে কিছু দিনের মধ্যে।এই নিয়োগে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তরিঘরি করে সভাপতি নির্বাচন করেন প্রধান শিক্ষক। আসলে এটা একটা বড় ধরনের অনিয়ম করে সভাপতিকে বানানো হয়েছে। যাকে সভাপতি করা হয় তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন ও ঢাকাতেই তিনি সবসময় থাকেন।স্কুলের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সভা ও সিদ্ধান্ত নিতে হলে সভাপতিকে উপস্থিত থাকতে হয় কিন্তু ঢাকায় অবস্থান করার কারনে নিয়োগ সহ বিভিন্ন সিদ্ধান্তগুলো প্রধান শিক্ষক নিজেই নিতে পারবেন বলে তিনি তার পছন্দ মত সভাপতি নির্বাচন করেছেন সদস্যদের পাশে রেখে।শুধু কমিটির সভাপতিই না কিছুদিন আগে স্কুল মেরামতের জন্য চার লক্ষ টাকা জেলা পরিষদের অর্থ আসলেও তিনি তা সঠিক ভাবে কাজ করেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। নতুন কাঠ ও নতুন ঢেউ টিন দিয়ে মেরামত করার কথা থাকলেও তিনি নতুন পুরাতন কাঠ ও টিন ব্যবহার করেছেন। চার লক্ষ টাকার কাজের কথা জানতে চাইলেও তিনি দুই লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছেন জানান।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধি মো. মাহাবুবুল আলম বলেন,প্রধান শিক্ষক, আমি সহ সংরক্ষিত সদস্য পারুল আক্তারকে না জানিয়ে ও সিগনেচার না নিয়ে ঘরোয়া ভাবে অনিয়মের মাধ্যমে এক দিনের মধ্যই তার পছন্দ মত সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি ২৭ জুন নির্বাচিত হওয়ার পরের দিনই সভাপতি নির্বাচন করে রেজুলেশন তৈরী করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে কমিটি অনুমোদনের জন্য পাঠান।নিজের ইচ্ছামত কমিটি পাশ করার বড় কারন হল আগামী কিছুদিন পরে পরে অত্র স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীর তিন জন ও সহকারী প্রদান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।এই নিয়োগে বড় ধরনের নিয়োগ বানিজ্য করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ হাতছারা না করতে নিজ ইচ্ছামত সভাপতি নির্বাচিত করেছেন বলে জানান তিনি।অভিযোগকারী এ সভাপতি নির্বাচন বাতিল করে নতুন করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সভাপতি নির্বাচন করতে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।আর কোন প্রার্থী যেন সভাপতি প্রার্থী না হতে পারেন সে কারনে একদিনের মধ্যেই নিজেদের পছন্দমত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
মুকুন্দিয়া উচ্চ-বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পারুল আক্তার বলেন, ২৭ জুনে অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হই। এর পরের দিন কিভাবে আমি ও আমাদের স্কুলের আরো একজন শিক্ষক সদস্যকে না ডেকে পরের দিন সভাপতি নির্বাচন করলেন প্রধান শিক্ষক তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। এ কারনে আমি ম্যানেজিং কমিটি বন্ধ করে সকলের অংশগ্রহন, মতামতের ভিত্তিতে পূঃন নির্বাচন দিয়ে নতুন কমিটি করতে আবেদন করেছি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক বরাবর। তিনি চান সকলের মতামত নিয়ে ভোটের মাধ্যমে যে সভাপতি হবে তাকেই তিনি মেনে নিবেন।এখানে কোন নয় ছয় বা কোন অনিয়ম আমরা মানবোনা বলে জানা তিনি।
মুকুন্দিয়া উচ্চ-বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গত ২৭ জুন তারিখে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। এর পরের দিন সকল সদস্যদের সাথে মিটিং করে ২৮ জুন সভাপতি নির্বাচন করেন।যেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ছিলেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মধুসূদন সাহা।মূলত তিনি নির্বাচন পরিচালনা করে সভাপতি নির্বাচন করেছেন। সভাপতি নির্বাচিত করতে আমার কোন হাত নেই।তাছাড়া আমার শ্বশুর অসুস্থ্যতার কারনে তাকে নিয়ে ঢাকা যাবো বলে আমি প্রিজাইডিং অফিসারকে জানাই।তখন সে পরের দিন নির্বাচন করার কথা বলেন। তাই আমি সকলের উপস্থিতিতে সভাপতি নির্বাচন করি। সভাপতি নির্বাচনের আগে গোপনীয়তা অবলম্বন করে সদস্যদের সিগনেচার নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন এমন কোন কিছু তিনি করেননি,করা সম্ভবও নয়।
স্কুলের আরেক সদস্য মিঠু জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের প্রায় পনেরো দিন আগে সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত হই। সভাপতি নির্বাচিত করা হয় আদের মতামতের ভিত্তিতেই। কিন্তু
প্রধান শিক্ষক স্বয়ং নিজেই জানান, সভাপতি নির্বাচিত করা হয় সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের পরের দিন।অথচ অভিভাবক সদস্য মিঠু ও আরেক সদস্য আব্দুল কাদের মোল্লা জানান সভাপতি নির্বাচনের দশ থেকে পনেরো দিন আগে আমরা সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছি।এখানে আর কোন সভাপতি প্রার্থী ছিলোনা।তাই যে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন তাকেই নির্বাচিত করেছি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও মুকুন্দিয়া ম্যনেজিং কমিটির নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার মধুসূদন সাহা বলেন, একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানের দ্বায়িত্ব মিটিং কল করে, সকল সদস্যদের ডেকে মতামতের ভিত্তিতে সভাপতি নির্বাচনের তারিখ নির্ধার করা।এখন সে যদি আমাকে সব দায় দেয় যে,আমি সভাপতি নির্বাচিত করেছি, তিনি কিছু করেননি তাহলে সে আপনাকে ভুল বলেছে। সে যেটা বলেছে সেটা সঠিক না।কারন নির্বাচনী ম্যানুয়ালে সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর সাত দিনের মধ্যে সভাপতি নির্বাচিত করার নিয়ম রয়েছে।প্রধান শিক্ষক পরের দিন সভাপতি নির্বাচিত করার কথা জানালে আমি এ্যাত তারাহুরো করার কি আছে বল্লে তিনি বলেন আমার শ্বশুর অসুস্থ্য তাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাবো,এ কারনে আমি তাকে পরের দিন সম্মতি দিয়েছি নির্বাচন করার।এখন সে যদি সম্পূর্ন দায় আমাকে দেয় তাহলে আমি তাকে আগামীকাল অফিসে ডেকে জবাব চাইবো কেন সে এ কথা গুলো বলছেন।তবে স্কুলের সব সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের ডেকে মতামত নিয়ে সভাপতি পদে কারা নির্বাচন করতে চান সেটা নোটিশ করা একটি স্কুল প্রধানের সম্পূর্ণ দ্বায়িত্ব, আমার নয়।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়