“আত্মহত্যার স্বরুপ” : লেখক- রাজ্জাকুল আলম
- Update Time : ১০:০৩:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
- / ৪৬ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
আত্মহত্যা মানে মানসিক অসুস্থতা। যখন কারও হিতাহিত জ্ঞান – বুদ্ধি, বিবেকবোধ ও উপলব্ধিবোধ লোপ পায় তখন সে নিজেকে অসহায়, ভারসাম্যহীন মনে করে আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নেয়। একটি সুন্দর জীবনের বেদনাদায়ক, করুণ, অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি উদ্ভবের ফলে অসময়ে ইহজগতের মায়া ত্যাগ করে পরজীবনের অলক্ষুণে সম্ভাবনাই হচ্ছে আত্মহত্যা। এটি একটি আত্নধ্বংসী সিদ্ধান্ত।
আত্মহত্যা বা আত্মহননের ইংরেজি suicide. ল্যাটিন ভাষায় সুইসেইডার থেকে আত্মহত্যা শব্দটি এসেছে। যার অর্থ নিজেকে হত্যা করা। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে মৃত্যুর দশটি কারনের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে আত্মহত্যা। WHO এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে ফিবছর ০৮ ( আট)লাখ লোক আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। অন্যদিকে আত্মহত্যার হারে বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে ১০ম অবস্থানে।
তুলনামুলকভাবে নারীদের চেয়ে পুরুষের, বিবাহিতদের চেয়ে অবিবাহিতদের, গ্রামের থেকে নগরবাসীর মধ্যে আত্নহত্যার প্রবনতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
মনোবিশারদদের মতে, অনেকে জানান দিয়ে আবার কেউ কেউ তাৎক্ষনিকভাবে বা হুট করে আত্নহত্যা করে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ইম্পালসিভ বা হুট করে, ডিসিসিভ বা ভেবেচিন্তে আত্মহত্যা করা বোঝায়। ডিসিসিভ আত্মহত্যা যারা করে তারা অধিকাংশ সময় হতাশাজনক কথা বলে, মৃত্যুর কথা বলে, সম্পত্তি উইল করে রেখে যায়, স্বজনদের সাথে সম্পর্ক রাখেনা, কোন সামাজিক আচার- অনুষ্ঠানে যায় না। মুলত বিষন্নতার কারণে এই আত্মহত্যা ঘটে। অন্যদিকে ইম্পালসিভ বা হুট করে আত্মহত্যা যারা করেন তাদের ব্যাক্তিত্বে, আচরণে পরিবর্তন আসে, তারা হাত পা কেটে ফেলে, হুট করে রেগে যায়, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা, ঘুমের ঔষধ খান, কারও কথা সহজে মেনে নিতে পারে না ইত্যাদি।
মুলত পরিবেশগতভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পদ্ধতিতে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে। তন্মধ্যে গলায় ফাঁস নিয়ে, ঘুমের ঔষধ খেয়ে, বিষাক্ত কীটনাশক পানে, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে, বৈদ্যুতিক সকের মাধ্যমে, রেললাইনে কাটা পড়ে, পানিতে ঝাপ দিয়ে , ছাঁদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা প্রচলিত। বিশ্বব্যাপী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মহত্যা বেশি হলেও বাংলাদেশে বিষপানে আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
সমাজবিজ্ঞানী এমিল ডুর্খেইম আত্মহত্যার কয়েকটি ভাগের কথা বলেছেন যথা আত্নকেন্দ্রীক, পরার্থমুলক, নিয়তিবাদী ও নৈরাজ্যমুলক আত্মহত্যা। তিনি আত্মহত্যাকে শ্রম বিভাজনের নেতিবাচক দিক হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর মতে, যারা সমাজের সঙ্গে অতিমাত্রায় জড়িত তারা আত্মহত্যা বেশি করে আবার যাঁরা সমাজ থেকে বেশি বিচ্ছিন্ন তারাও আত্মহত্যা করে থাকে।
আত্মকেন্দ্রিক আত্মহত্যাঃ সমাজ ও গোষ্ঠীর সঙ্গে সংহতির অভাব দেখা দিলে এ ধরনের আত্মহত্যা ঘটে।যে সকল সমাজে সামাজিক সংহতি কম থাকে সে সকল সমাজে আত্মকেন্দ্রিক আত্মহত্যা বেশি ঘটে। সমাজ থেকে ব্যক্তি যখন নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করে তখন সমাজে বেঁচে থাকা সে নিরর্থক মনে করে এবং তখনই আত্মকেন্দ্রিক আত্মহত্যা ঘটে। সমাজের অবহেলিত শ্রেণীর মানুষের মধ্যে এ রকম আত্মহত্যা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
নৈরাজ্য মূলক আত্মহত্যাঃ যখন সমাজে ব্যক্তির মূল্যবোধের প্রভাব হারিয়ে যায় তখন তাকে নৈরাজ্যমূলক অবস্থা বলে। সাধারণত বড় ধরনের বিপ্লব বা দুর্যোগের পর এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যেমন ফরাসি বিপ্লব পরবর্তী ফ্রান্সের সমাজ ব্যবস্থা।
নিয়তিবাদী আত্মহত্যাঃ নিয়ম কানুনের অতিরিক্ত করাকরি আরোপের ফলে মানুষের জীবন যখন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে এবং নিজের জীবন অতিষ্ঠ করে তখন তাকে নিয়তিবাদী আত্মহত্যা বলে যেমন ফ্রান্স সমাজে দাসীগণ অতিরিক্ত অত্যাচার নিপীড়নে আত্মহত্যা এ ধরনের আত্মহত্যার উদাহরণ।
পদার্থ মূলক আত্মহত্যাঃ এ রকম আত্মহত্যা এমন পরিস্থিতিতে ঘটে যখন ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে সমাজের স্বার্থ বড় হয়ে দেখা যায়। যখন মানুষ নিজেকে নিয়ে চিন্তা করার পরিবর্তে সমগ্র দেশ জাতির চিন্তা করে থাকে। যেমন মুক্তিযুদ্ধে দেশপ্রেমে উদ্বেলিত হয়ে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা।
আত্মহত্যাকারী যখন আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয় তখন তার মধ্যে আচরনগত পরিবর্তনসহ বেশ কিছু লক্ষ্মণ প্রকাশিত হয় যথা
১) নিজেকে সকলের কাছে বোঝা মনে করা।
২) অসহনীয় ও জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এবং পৃথিবীতে তার প্রয়োজন নেই মনে করে।
৪) সরাসরি বা পরোক্ষভাবে বিভিন্ন সময় আত্মহত্যার কথা প্রকাশ করা ।
৫) নিজেকে সকলের কাছ থেকে গুটিয়ে রাখা।
৬) এক বা একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করা ।
৭) যে কোনো সুইসাইড নোট লেখা বা জীবনী লিপিবদ্ধ করা।
৮) অসংলগ্ন আচরণ, বিষন্নতা ও হতাশা প্রকাশ করা ।
৯) প্রিয়জনের কাছে মাঝে মাঝে ক্ষমা চাওয়া ।
১০) নিজের প্রতি অপরাধবোধ, ঘৃণা ও ধিক্কার
প্রকাশ করা।
১১) আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে আত্নহত্যার বিভিন্ন সামগ্রী যেমন, রশি, ঘুমের ঔষুধ, কীটনাশক লুকিয়ে রাখা।
১২) নিজের প্রতি যত্ন না নেওয়া ।
১৩) প্রচন্ড মানসিক কষ্টে বা যন্ত্রণায় থাকা ।
১৪) ঘুমের রুটিনের পরিবর্তন আনয়ন।
১৫) মাদকে আসক্ত হওয়া ও রাত জেগে থাকার অভ্যাস তৈরি করা।
১৬) নিজের পছন্দের জিনিস অন্যকে দিয়ে দেওয়া ।
১৭) মৃত্যু বা সহিংসতা নিয়ে অধিক চিন্তা করা ।
১৮) প্রতিশোধ মূলক কথাবার্তা বলা।
সাধারনত যে সমস্ত কারণে মানুষ আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নেয় যথাঃ
১) মানুষ জীবনে নানাবিধ ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পরিবার গঠনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়, যেখান থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
২) কারও উপর যখন নির্যাতন করা হয় তখন সেই নির্যাতনের লজ্জা সহ্য করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা করে থাকে।
৩) দাম্পত্য কলহ, পরকীয়া প্রেম ও পারিবারিক নির্যাতনে অনেক ক্ষেত্রে আত্মহননে উৎসাহিত হয়।
৪) শিক্ষাঙ্গনে সহপাঠী বা বিভিন্ন মহল হতে ছাত্রীরা বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে এ-ই ধরনের পথ বেছে নেয়।
৫) প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মেয়েরা বিভিন্ন সময় নিজস্ব আত্মীয় স্বজন দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। যে ঘটনা তাকে আত্মহননের পথে ধাবিত করে।
৬) failure is the pillar of success. কিন্তু বর্তমানে তরুণ সমাজ জীবনে দ্রুত সফলতা অর্জন করতে চায়। পক্ষান্তরে বিফলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তাদের জন্য সত্য এটাই failure is the killer of life.
৭) Generation gap বলে প্রচলিত কথা রয়েছে। সমাজ সর্বদা পরিবর্তনশীল। আর রক্ষনশীলতার সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তনশীলতার দন্দ্ব সর্বকালে সর্বসময়ে বিদ্যমান। এই দন্দ্বের কারণে অনেকে আত্মহননের পথে ধাবিত হয়। অথ্যাৎ সংস্কৃতির অসম অগ্রগতি তত্ত্বের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা সমাজের মধ্যে বেশ লক্ষ্য করা যায়।
৮) নারীর ক্ষমতায়নের কারণে নারীরা বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে এমনকি দেশ রক্ষার কাজেও নিয়োজিত রয়েছে কিন্তু কর্ম ক্ষেত্রে যথেষ্ট নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা এই জঘন্য পথ বেছে নেয়।
৯) প্রিয় জিনিস যেমন মোটরসাইকেল, মোবাইল, ল্যাপটপ কিনে না দেওয়ার ফলে অকালে ইহজগৎ ছেড়ে পরজীবনের চিন্তা করে।
১০) গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, রাতে ৫ ঘন্টার কম ঘুমালে বিষন্নতা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং সেখান থেকে আত্মহত্যার চিন্তা বেশি হয়।
১১) মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নিজের অজান্তে অথবা বিমর্ষ চিত্রে আত্মহত্যা করে থাকে । গবেষণায় প্রমাণিত যে, হিরোইনসেবীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সাধারণ মানুষের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি।
১২) পরীক্ষায় অকৃতকার্য বা তুলনামূলক ভালো রেজাল্ট না করতে পেরে অনেক ছাত্র -ছাত্রী ভয়ে বা আবেগের বশবতী হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
১৩) দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন জটিল, কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অসহ্য হয়ে মুক্তি লাভের আশায় বিষাদময় এই জঘন্য পথকে সঙ্গী করে।
১৪) আত্মহত্যা প্রবনতায় ৩৮% থেকে ৫০% ক্ষেত্রে জিন দায়ী। যে পরিবারে আত্মহত্যার ইতিহাস রয়েছে সে পরিবারে আরও আত্মহত্যার কেস খুঁজে পাওয়া যায়।
১৫) বিষন্নতা, বাইপোলার ডিস অর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, লাভ অবসেশন ইত্যাদি আত্মহত্যার কারণ।
১৬) বাংলাদেশে অবৈধ গর্ভধারণ আত্মহত্যার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত।
১৭) ভয় ভীতি প্রদর্শন, হুমকি দেওয়া, বল প্রয়োগ, বিব্রত করা, খারাপ আচরণ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রেগিং, ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত বিষয় ফাঁস করে দেওয়া, ইত্যাদি আত্মহত্যার কারণ হিসেবে বিবেচিত।
১৮) অর্থনৈতিক মন্দা বা দারিদ্রতার কারণে কোন কোন সময় ক্ষুধার যন্ত্রণায় নিজে বা সপরিবারে আত্মহত্যার নজির রয়েছে। অনেকে দেনার দায়ে লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করে থাকে।
১৯) এ দেশে আত্মহত্যার উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় আত্মহত্যার ঘটনা সমাজের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যায়।
২০) অনৈতিক কর্মকান্ড, যেমন ঘুষ,দুর্নীতি ইত্যাদি কর্মকান্ডে জড়িয়ে অনেকসময় লোকে লজ্জার ভয়ে এই পথ বেছে নেয়। –
২১) অতিরিক্ত করাকরি বা অতিরিক্ত শাসনের কারণে ছেলেমেয়েরা কখনও কখনও আত্মহত্যার পথে ধাবিত হয়।
২২) বর্তমান সমাজে যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার সৃষ্টি হওয়ার বদৌলতে আদর, ভালোবাসা, স্নেহ, মায়া- মমতা, ভালোবাসা বঞ্চিত হয়ে একাকিত্বের কারনে মানসিক বিষাদগ্রস্থ হয়ে ছেলে – মেয়েরা আত্নহত্যায় উজ্জীবিত হয়।
২৩) কোন কোন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যেমন মৃগী রোগীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি লক্ষণীয়।
২৪) ব্যক্তিত্বসম্পন্ন লোকদের আত্মসম্মানে আঘাত হানে জাতীয় কোন ঘটনা যদি ঘটে তাহলে অনেকেই লোক লজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করে থাকে।
২৫) বিশ্বায়নের নেতিবাচক প্রভাবে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা বৃদ্ধি অথবা কর্মসংস্থানের অভাব হেতু মানুষ আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়।
২৬) যৌতুক, স্বামী বা স্ত্রী পছন্দ না হওয়া, প্রিয়জনের সাথে বিবাহ না দেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে স্বামী বা স্ত্রী আত্মহত্যা করে থাকে।
২৭) প্রেমে ব্যর্থতা আত্মহত্যার একটি অন্যতম কারণ।
২৮) ব্যবসায়িক মন্দা বা ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংসের কারণে অনেকে আত্মহননের পথে ধাবিত হয়।
২৯) প্রিয়জনের মৃত্যু সংবাদ শুনেও অনেক সময় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকে।
৩০) সামাজিক অস্থিরতার কারণে অনেকে সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলাতে না পেরে আত্মহত্যার দিকে অগ্রসর হয়।
৩১) নিঃসন্তান দম্পতি বা আকাঙ্খিত পুত্র বা কন্যা সন্তান জন্ম দিতে না পেরে আত্মহননের পথে অগ্রসর হতে পারে।
এছাড়াও মানুষের জীবনে নানাবিধ আর্থ- সামাজিক,সাংস্কৃতিকসহ বিবিধ কারণ আত্মহত্যার পেছনে দায়ী রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ এই আত্মহত্যা যেভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারেঃ
১) কারো মধ্যে আত্মহত্যার কোন লক্ষণ দেখা দিলে তাকে উপহাস বা ঠাট্টা করা যাবে না।
২) পরিবারের কারো মধ্যে এমন আচরণ দেখা দিলে বিষয়টি গুরত্বের সাথে দেখতে হবে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
৩) এমন ব্যক্তির মানসিক কষ্ট লাঘবের জন্য সর্বাত্মক কাউন্সিলিং করতে হবে।
৪) মানসিক রোগীর কথা সহমর্মিতার সাথে শুনতে হবে।
৫) ব্যাক্তির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।
৬) আত্মহত্যাপ্রবন ব্যাক্তিকে কখনোই একা রাখা যাবেনা।
৭) আত্মহত্যাপ্রবন ব্যাক্তির কাছ থেকে আত্মহত্যার বিভিন্ন উপকরণ সরিয়ে রাখতে হবে।
৮) প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করে যথাযথভাবে চিকিৎসা দিতে হবে।
৯) মনোবলকে শক্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
১০)েপ্রসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ঔষধ বিক্রি করা যাবে না।
১১) পারিবারিক বিনোদনের ব্যবস্হা রাখতে হবে।
১২) সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
১৩) সঠিক ও আদর্শ জ্ঞান অনুধাবণে মনোনিবেশ করতে হবে।
১৪) প্রয়োজনীয়সংখ্যক চিকিৎসাকেন্দ্র, সাইকোথেরাপিস্ট গড়ে তুলতে হবে।
১৫) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগের মাধ্যমে আত্মহত্যার পরিমাণ কমানো যায়।
১৬) মাদকাসক্তির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা।
১৭) প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে উৎসাহিত করা।
১৮) মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় মানসিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সর্বোপরী দেশের মানুষের মানসিক সুস্বাস্থ্যের বিকাশে সরকারের পাশাপাশি সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, বিত্তবান শ্রেণী, বিজ্ঞ, শিক্ষিত, ধর্মীয় নেতা, রাজনৈতিক নেতা,সাংবাদিক, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি, সরকারি, আধা-সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপ্রধান, মসজিদের খতিব, এনজিও, জিও, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ প্রচারমাধ্যম কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
লেখক : রাজ্জাকুল আলম, সহকারী অধ্যাপক, মীর মশাররফ হোসেন কলেজ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠ শুভসংঘ।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়