৭ মাসেও সংস্কার হয়নি দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট, বর্ষা ও ঈদে যাত্রী দূর্ভোগের শঙ্কা –
- Update Time : ০৯:০২:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২
- / ১৬ Time View
রুবেলুর রহমান, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দেশের দক্ষিণ পশ্চিমঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত। এরুটের নৌযান (লঞ্চ) দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নদী পারাপার হয়।
গত বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে নদীতে বিলিন হয় দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট। ফলে ঘাটের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের যাতায়াতের কাঠের দু্ইটি সেতু। দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও সংস্কার হয়নি ক্ষতিগ্রস্থ ঘাট ও সেতু। ফলে যাত্রীরা ঝুকি নিয়ে মাটির সিড়ি দিয়ে লঞ্চ ঘাটে আসা-যাওয়া করছে। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ ঘাট ও সেতু সংস্কার করা না হলে আসন্ন বর্ষার বৃষ্টি ও ঈদ মৌসুমে মাটির সিড়িতে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে ধারনা যাত্রী ও লঞ্চ মালিক শ্রমিদের।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ৩৪টি লঞ্চ চলাচল করেছে। যা দিয়ে দিনে প্রায় শতাধিক টিপ পরিবহন করে প্রায় ১০ হাজার যাত্রী পারাপার করা হয়। বর্তমানের তুলনায় ঈদে যাত্রী পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুন। ফলে মাটির সিড়িতে হোচট ও পিচ্ছিল খেয়ে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে নদীর পানি কমে যাওয়ায় মাটির সিড়ি দিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট নিচে নামতে ও উপরে উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। এসময় নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। তাছারা মালামাল বহন করে ওঠা-নামায়ও সমস্যা হচ্ছে যাত্রীদের।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চ ঘাটের কাঠের সেতু দুইটি প্রবেশ পথে বন্ধ। এবং শেষ ভাগ ঘাটের পন্টুন থেকে অনেক উচুতে। যার অবস্থা জরাজির্ণ। যাত্রীরা সেতুর পরিবর্তে মাটি ও সেতুর নিচ দিয়ে হেটে মাটির সিড়ির মাধ্যমে লঞ্চ ঘাটে প্রবেশ করছেন। এদিকে ঘরমুখি যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নেমে অপর পাশের একই ভাবে করা মাটির সিড়ি ব্যবহার করে ওপরে উঠছেন। এ সময় মালামাল বহন করে অনেককেই ওপরে উঠতে কষ্ট হচ্ছে।
যাত্রী হারেজ মিয়া, কামরুজ্জামানসহ কয়েকজন বলেন, গত বর্ষার নদী ভাঙনের কারণে লঞ্চ ঘাট ও তাদের যাতায়াতের কাঠের সেতু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরপর থেকে তাদের ঝুকি নিয়ে মাটির সিড়ি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা ও সিড়ি কাদায় পিচ্ছিল হয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে যায়। এ সময় পিচ্ছিল খেয়ে অনেকে অাহত হয়। এবং তাদের কাপড় চোপড় নষ্ট হয়। সামনে বর্ষার মৌসুম প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হবে, তখনও যদি এই অবস্থা থাকে তাহলে তাদের খুব কষ্ঠ হবে।
তারা অারও বলেন, এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী অাসা যাওয়া করে। ঈদে তার সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুন। ঘাট ও যাতায়াতের পথ ভাল না করলে বহু দূর্ঘটনা ঘটবে। তাই দূর্ঘটনা রোধে দ্রুত লঞ্চ ঘাট ও তাদের যাতায়াতের সেতু দুইটি সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন। এ জন্য তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
লঞ্চ মালিকের প্রতিনিধি মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার দুই পাশ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নদী পারাপার হচ্ছে। কিন্তু দৌলতদিয়া ঘাটের যাত্রীদের অাসা যাওয়ার যে সেতু, তা দীর্ঘ দিন অকেজো হয়ে পরে অাছে। এখন যাত্রীরা মাটির রাস্তা ও সিড়ি দিয়ে অাসা যাওয়া করছে। প্রায় ৫ থেকে ৬ মাসে অাগে নদী ভাঙনে লঞ্চ ঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হলেও অাজ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ সংস্কারের প্রয়োজন মনে করে নাই। যার কারণে যাত্রীদের পাশাপাশি লঞ্চ মালিক-শ্রমিক দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এখন শুষ্ক মৌসুমে যাত্রীরা অাসা যাওয়া করলেও বৃষ্টির মৌসুমে তাদের অবস্থা খুব খারাপ হবে। তাই দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে এটি সংস্কার করা না হলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রী সংকটে পড়বে। এবং যাত্রীদের ভোগান্তির সীমা থাকবে না। তাছাড়া ঈদে ঘরমুখো যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তখন যাত্রী ও তাদের দূর্ভোগ অারও বাড়বে।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম জানান, ঘাট আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় দৌলতদিয়ায় ৬ কিলোমিটার স্থায়ী কাজ হবে। গত বর্ষায় নদী ভাঙনে ঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় যাত্রীদের চলাচলের জন্য মাটির রাস্তা করে দিয়েছেন। বর্তমানে যাত্রীরা মাটির সিড়ি ব্যবহার করছে। ঈদের সময় নদীর পানি বৃদ্ধির আলোকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে যে কোন একটি ফেরি ঘাটকে লঞ্চ ঘাট হিসাবে ব্যবস্থা করবেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়