“পরীক্ষার্থীদের কথাই সত্যি হলো” –

- Update Time : ০৮:০৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মে ২০১৮
- / ৫৭ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাবুপুর কছিমউদ্দিন বিদ্যাপীঠ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ৮৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৫৪ জন। অথচ এ সব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টেষ্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেছিলো মাত্র ১০ জনকে। ফলাফল প্রকাশ পাবার পর শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ওই অভিযোগই সত্যি প্রমাণিত হলো।
জানাগেছে, ওই বিদ্যালয় থেকে বিগত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের এসএসসির ফরম পূরণে জনপ্রতি ১ হাজার ৭০৫ টাকা থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকা নেয়া হয়। অথচ সুকৌশলে টাকা আদায়ের রশিদে ১ হাজার ৭০৫ টাকা লেখে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং অর্থ আদায়ের কৌশল স্বরুপ টেষ্ট পরীক্ষায় মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থীতে উত্তীর্ণ করার প্রতিবাদে ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর পরীক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক জেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটির গঠন করেন। ওই কমিটি একই বছরের ৭ ডিস্বেম্বর সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাবুপুর কছিমউদ্দিন বিদ্যাপীঠে যায় এবং শিক্ষার্থীদের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ গ্রহণ করেন। যার প্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শনোর নোটিশ করাসহ ফরম পূরণে নেয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ দেবার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
বাবুপুর কছিমউদ্দিন বিদ্যাপীঠ (বিকেবি) ছাত্র-কল্যান সংস্থার সভাপতি বলেন, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের চাপের মুখে বিগত এসএসসি পরীক্ষা শেষ হবার কয়েক দিন পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফরম পূরণের অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ দিতে বাধ্য হয়। তবে ফরম পূরণের টাকার সাথে কোচিং ফি ঠিকই রেখে দেয়। তিনি বলেন, ফরন পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের লক্ষে কৌশল হিসেবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসএসসি’র টেষ্ট পরীক্ষায় ৮৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনকে পাস করায় এবং বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীকে ২ থেকে ৭ বিষয় পর্যন্ত ফেল করায়। অথচ গত রবিবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে ৮৬ জনের মধ্যে ৫৪ জন পরীক্ষার্থীই পাস করেছে এবং যে ৩২ জন শিক্ষার্থী ফেল করেছে তাদের বেশির ভাগই দুই থেকে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এমন কৌশল করে টাকা আদায় করা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ঠিক হয়নি। অংকুরেই এমন প্রতারণা মূলক ধাক্কা খেয়েছে শিক্ষার্থীরা। তার দাবী এ অপরাধের সর্বচ্চ শাস্তি প্রদান এবং আগামিতে একই ধরণের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।
ওই বিদ্যালয় থেকে এবারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থী মোঃ রিক্তন মন্ডল জানায়, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে প্রতারণা করেছে। যার প্রমাণ ফলাফলে উঠে এসেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টেষ্ট মাত্র ১০ জনকে উত্তীর্ণ করেছিলো, অথচ এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৪ জন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও সে দাবী জানিয়েছে।
ডবদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন অংশ গ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের সংখ্যা জানাতে সক্ষম হলেও টেষ্ট পরীক্ষায় কত জনকে পাস করিয়ে ছিলেন, তার তথ্য তিনি ভুলে গেছেন বলে জানান।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সাদেকুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শনো, অতিরিক্ত অর্থ ফের প্রদানে বাধ্য করা হয়েছে। তবে কৌশলে টেষ্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য করে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখন বলে জানিয়েছেন।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়