শতাধিক বিঘা জমি নদীতে বিলীন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই গোয়ালন্দে ভাঙছে পদ্মাপাড় –
- Update Time : ০৬:৫৬:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৮
- / ১৪ Time View
আসজাদ হোসেন আজু , রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
সবে গ্রীষ্ম শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হতে এখনো প্রায় দুইমাস বাকি। এরই মধ্যে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে নদীভাঙন। গত ৩/৪ দিনের নদী ভাঙনে পদ্মা বিলীন হয়েছে শতাধিক বিঘা ফসলী জমি। ভিটে-মাটি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে গেছে কয়েকটি পরিবার।
জানা যায়, উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের অন্তার মোড় চর বরাট থেকে দেবগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত পদ্মাতীরবতী এলাকা নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এই এলাকার হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর বর্ষা শুরুর আগেই এখানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত ৩/৪ দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ছোট ভাকলা ইউনিয়নের চরবরাট, দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেথুরী, সাঁজাপুর, বেতকা ও চর দেলুন্দি গ্রামের শতাধিক বিঘা ফসলী জমি।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, পদ্মা নদীতে তীব্র ¯্রােত শুরু না হলেও বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ঝড়ো বাতাসে নদীতে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল আকারের ঢেউ। আর এই ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙতে শুরু করেছে পদ্মা পাড়। গত এক সপ্তাহে ভাঙনের কবলে পড়ে পদ্মাপাড়ের বিস্তির্ণ ফসলি জমি ও গাছপালা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি ভাঙন আতঙ্কে ওই সকল গ্রামের অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
সরেজমিন গত বুধবার দুপুরে অন্তার মোড় এলাকার চরবরাট নদীতীরে গিয়ে দেখা যায়, বাতাসের কারণে নদী প্রচন্ড উত্তাল। বড় বড় ঢেউ আচরে পড়ছে নদীপাড়ে। আর ঢেউয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নদীপাড় ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদী গর্ভে। পাশেই কয়েকটি শুন্য ভিটে পড়ে আছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে একদিন আগেও এখানে ছিল বসত বাড়ি। হয়ত নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে পরিবারগুলো অন্যত্র চলে গেছে।
ছোটভাকলা ইউনিয়নের চরবারাট গ্রামের সুন্নত খাঁ গত ৪/৫ দিনে নদীর পাড় অন্তত ৩৫/৪০ ফুট ভেঙেছে জানিয়ে বলেন, তিনি কয়েক দফা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে দুই বছর আগে চরবরাট গ্রামে বাড়ি করে বসবাস করছিলেন। কিন্তু এ বছর এখানেও আর বসবাস করা সম্ভব হবে না। কারণ বর্ষা শুরুর আগেই যে পরিমান ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে বর্ষায় কি ভয়াবহ অবস্থা হবে তা ভাবতেই পারছেন না।
একই অবস্থা ওই গ্রামের মৈজদ্দিন শেখের। তিনি বলেন, ‘গাঙে এহন পানি কম, ধার (¯্রােত) নাই, খালি তাফালেই এরহম ভাঙতাছে, পানি বাড়লে আর ধার অইলে কি অবস্থা অবি তা আল্লা জানে।’
দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মো. আতর আলী সরদার জানান, দেবগ্রাম ইউনিয়ন একটি নদী ভাঙন এলাকা। গত কয়েক বছরের ভাঙনে এই ইউনিয়নের বড় একটি অংশ এখন নদীগর্ভে। নিয়মিত ভাঙনের ফলে পদ্মাপারের এই ইউনিয়নটির ভৌগলিক সীমা দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। এদিকে গণদাবী থাকা সত্বেও এলাকার নদীভাঙন রোধে কার্যকর স্থায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, ‘জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করা না গেলে আগামীতে দেবগ্রাম ইউনিয়নের বেশীর ভাগ গ্রাম পদ্মায় বিলিন হয়ে যাবে।’
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু নাসার উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়