রাজবাড়ীতে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, সদর হাসপাতালে রোগী ও তার স্বজনদের দূর্ভোগ চরমে-

- Update Time : ০৮:১৮:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ এপ্রিল ২০১৮
- / ১২ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
তীব্র গরমে রাজবাড়ীতে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ৩৯ রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে গতকাল সকালে ভর্তি হয়েছে ১৩ জন। স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের ডায়রিয়া ওযার্ড ছাপিয়ে মূলভবনের বারান্দাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঠায় মিলেছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।
গতকাল দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনের গাছ তলায় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনা অবস্থান করছে। ওয়ার্ডের বাইরে অবস্থানের কারণ জানতে চাইতেই এক ডায়রিয়া রোগীর স্বজন সাইদুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা ডায়রিয়া ওয়ার্ড না গোয়াল ঘর তা তিনি বুঝতে পারছেন না। পুরো ওয়ার্ড জুড়েই দুর্গন্ধ। রয়েছে বৈদুতিক আলো ও বাতাসের অভাব। তার উপর শয্যা ও ফ্লোরে গরু সাজানোর মত করে রোগী ও তাদের স্বজনদের রাখা হয়েছে। একটু ভাল থাকার জন্য অনেকেই সকাল হতে না হতে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনের গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে।
ওই হাসপাতালের মূল ভবনের নিজ তলার বারান্দায় অবস্থান করা শিশু ফাইমের মা জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, তার ছেলে কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল সকালে তিনি তাকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোন আসন না থাকায় তাকে এই খোলা বারান্দায় শিশুকে নিয়ে থাকতে বলেছে। এখানেই তার ছেলের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। তার মত আরো অনেকই এই বারান্দায় অবস্থান করছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, পা ফেলার জায়গাও নেই। আছে দুর্গন্ধ। বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুরছিলনা বৈদ্যুতিক পাখাও। গরমে অসুস্থ্য শিশুরা করছিল চিৎকার। সেখানে আগত রোগীর স্বজনরা জানান, রাজবাড়ীতে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হলেও গরমের তীব্রতা কমেনি। তাছাড়া ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়া জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাত ও দিনের বেশির ভাগ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। ফলে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সেই সাথে মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে যুক্ত হয়েছে ডায়রিয়া।
ওই সময় সে ওয়ার্ডে থাকা একাধিক সেবিকা বলেন, তাদের কিছু করার নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এখানে রোগীরা আসেন এবং তারা ভালমত বাথরুম ব্যবহারও করতে পারেনা। যে কারণে গন্ধ হয়েছে। তাছাড়া রোগীর চাপ রয়েছে অতিরিক্ত। যে কারণে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ফলে রোগীদের ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ গোলাম ফারুক বলেন, বাসি, পচা খাবার খাওয়া যাবে না, গরম থেকে বাঁচতে বাতাসের মধ্যে থাকতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হাত সাবান দিয়ে না ধুয়ে কেউ কোন খাবার খাবে না।
রাজবাড়ী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আলী আহসান জানান, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আসন সংখ্যা ১২টি। অথচ গতকাল সকাল পর্যন্ত রোগী ছিলো ২৬ জন এবং দুপুর পর্যন্ত ভর্তি হয় আরো ১৩ জন। বেড সংকটের কারণে রোগীদের মূল ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে। গরমের তীব্রতা না কমা পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও তিনি জানান।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়