তেলের অভাবে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ ॥ রোগীদের দূর্ভোগ চরমে-

- Update Time : ০৭:৩৯:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল ২০১৮
- / ১৭ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
৩৩ লাখ টাকা বকেয়া থাকায় ফিলিং স্টেশন থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তেল সরবরাহ। ফলে গতকাল সোমবার সকাল থেকে আর চলছেনা রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের দুইটি এ্যাম্বুলেন্স। এতে করে রোগী ও তার স্বজনরা পরেছেন বিপাকে। সরকারী এ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় তারা বে-সরকারী এ্যাম্বুলেন্স ও সাধারণ মাইক্রোবাসে রোগীদের ফরিদপুর অথবা রাজধানী ঢাকার হাসপাতাল গুলোতে নেয়া হচ্ছে।
গতকাল সকাল ১১টার দিকে ওই হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখাযায় একটি বে-সরকারী এ্যাম্বুলেন্স। সেখান উপস্থিত এক রোগীর স্বজন ফজলুল করিম বলেন, এ বে-সরকারী এ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে তাদের রোগীকে। এ এ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া করা হয়ে সাড়ে ৭ হাজার টাকায়। তারা দরিদ্র মানুষ, সরকারী এ্যাম্বুলেন্স পেলে বেশ কিছু টাকা তাদের বাঁচতো। অথচ তেল না থাকায় সরকারী এ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, সরকারী এ্যাম্বুলেন্সে প্রতি কিলো মিটারের জন্য ভাড়া নেয়া হয় মাত্র ১০ টাকা। সে অনুযায়ী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত ভাড়া ৬৬০ টাকা এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত ভাড়া ৪,৪০০ টাকা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মচারী বলেন, বে-সরকারী এ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাস গুলোতে গুরুতর রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করার মত নেই কোন উপকরণ। তার পরও ওই সব এ্যাম্বুলেন্সে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত ভাড়া দুই হাজার এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত ভাড়া ৮ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। এতে করে দরিদ্র ও গরীর রোগীরা পরছেন আর্থিক কষ্টে। সরকারী এ্যাম্বুলেন চালু থাকলে অন্তঃত কিছুটা আর্থিক ক্ষতি কম হতো।
হাসপাতালের প্রধান সহকারী মোফাজ্জেল হোসেন জানান, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে এ্যাম্বলেন্সের ভাড়ার আয় বাবদ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয় ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৩২০ টাকা। এ অর্থ বছরে তেল সরবরাহকারী পাম্পে বকেয়া হয় ৮লাখ ৮ হাজার ৮২৭ টাকা। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে এ্যাম্বলেন্সের ভাড়ার আয় বাবদ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয় ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৬২০ টাকা। এ অর্থ বছরে তেল সরবরাহকারী পাম্পে বকেয়া হয় ১৩লাখ ৩৬ হাজার ৪০৪ টাকা। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে বর্তমান সময় পর্যন্ত এ্যাম্বলেন্সের ভাড়ার আয় বাবদ সরকারী কোষাগারে জমা দেয়া হয় ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬০ টাকা। এ অর্থ বছরে তেল সরবরাহকারী পাম্পে বকেয়া হয় ১২লাখ ৩১ হাজার ৫০৩ টাকা। মোট আয় ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার ৫শত টাকা এবং মোট বকেয়া পরেছে ৩৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭৩৪ টাকা।
হাসপাতালের তত্ববধায়ক স্বপন কুমার কুন্ডু জানান, এ হাসপাতালের দুইটি এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। ওই এ্যাম্বুলেন্স দু’টির জ¦ালানী তেল সরবরাহ করা হয় জেলা একটি পেট্রোল পাম্প থেকে। ওই পাম্পে থেকে বিগত মাসেও একবার বকেয়া পরিশোধের জন্য পত্র প্রদান করা হয়। তিনি নিজে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গিয়ে চার লাখ টাকা বরাদ্দ আনতে সক্ষম হন। তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। বর্তমানে আরো ৩৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭৩৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। যে কারণে পাম্প কর্তৃপক্ষ গত ৮ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া টাকা প্রদান এবং টাকা প্রদান না করলে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হবে। যেহেতু তারা কোন বরাদ্দ আনতে পারেনি, তাই তারা তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের পত্র দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেই সাথে সরাসরি স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক (অর্থ) এর সাথেও তিনি কথা বলেছেন। তবে কবে নাগাদ অর্থ বরাদ্দ আসবে এবং এ্যাম্বুলেন্স চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে তা তিনি জানাতে পারেননি।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়