বালিয়াকান্দির আশ্রয়ণ প্রকল্পে চন্দনা নদীর মাটি –
- Update Time : ০৯:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মার্চ ২০১৮
- / ১৯ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার দিলালপুর গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। তবে এই মাটি অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে মাত্র ৫০ গজ দূরে থাকা চন্দনা নদী থেকে। অথচ এই মাটি ভরাটের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩২ মেট্রিক টন গম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি সড়কের পাশে উপজেলার দিলালপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মাটি ভরাটের জন্য ৩২ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) হিসেবে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মাসুদ রানা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও চন্দনা নদীতে অবৈধভাবে ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চন্দনা নদীতে অবৈধ ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে ভরাট করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিনের মালিক মো. আরিফ হোসেন দেখভাল করছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘এটা সরকারি কাজ। আমাকে ভরাট করতে বলেছে। তাই ভরাট করছি। বিষয়টি প্রশাসনের সবাই অবগত আছে।’
এলাকাবাসী জানায়, রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি সড়কের পাশে চন্দনা নদী। নদীতে নতুন সেতু নির্মাণকাজ চলছে। পাশেই সড়কে আরেকটি সেতু। নির্মাণাধীন সেতুর জন্য চন্দনা নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। সেতুর ক্ষতি ও চন্দনা নদীর পারে ভাঙনের আশঙ্কায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ড্রেজার ধ্বংস করেন। এ ঘটনার কয়েক মাস না যেতে তার ৫০ গজ দূরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাঁচ দিন ধরে চলছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ। বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। যেভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে নদীর দুই পারে ভাঙন দেখা দেবে খুব দ্রুত। সরকার চন্দনা নদীতে সারা বছর পানি রাখার জন্য চন্দনা-বারাশিয়া প্রকল্প গ্রহণ করে। এ বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে এবং সুফলতা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা জানান, ১১০ ফুট চওড়া এবং ১৯৩ ফুট লম্বা মাটি ভরাট কাজের জন্য ৩২ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার সরকারি মূল্য আট লাখ ৯৬ হাজার টাকা। তবে তা বালু দিয়েও ভরাট করা যাবে। নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলার কাজ করায় তা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
ওই প্রকল্প কমিটির সদস্য ও নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, নদী থেকে বালু কেটে তা সরকারি প্রকল্পে ফেলা হচ্ছে। এটা দোষের নয়। তার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করা হয়েছে ২০ হাজার বর্গফুট বালু উত্তোলন করার।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এস এস নুরুন্নবী জানান, এরই মধ্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। আর যদি বালু উত্তোলন করতে হয়, তাহলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রতি বর্গফুট বালু এক টাকা দরে রাজস্ব দিয়ে তা নদী খননের ডিজাইন মেনে উত্তোলন করতে হবে। গতকাল ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদন তিনি পেয়েছেন, সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা জানান, সরকারি প্রকল্পের জন্য সরকারি জায়গা থেকে বালু ফেলা হচ্ছে, এটা দোষের কিছু নয়। সরকারি বিধান মতেই করা হচ্ছে।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শওকত আলী বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়