শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীর ডিও লেটারেও উঠে এলো ইউএমসি জুটমিলের কর্তাদের আড়াই কোটি টাকা আত্নসাত চিত্র –
- Update Time : ০৮:০৬:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মার্চ ২০১৮
- / ১৪ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলে রাজবাড়ী থেকে পাঠানো পাট বহনকারী ট্রাক নম্বর ও চালকের নাম ঠিক রেখে সু-কৌশলে মালিকের নাম এবং এজেন্সির নাম পরিবর্তন করে কয়েক কোটি টাকা আতœসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারী শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী কর্তৃক একটি ডিও লেটার ঢাকার সেগুনবাগিচা কার্যালয়ের বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রদান করা হয়েছে।
ওই ডিও লেটারে শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী উল্লেখ করেছেন, তিন জন পাট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আতœসাত করা হয়েছে। টাকা আতœসাৎকারী নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ জুট ফাইবার গ্লাস ইন্ড্রাস্ট্রিসের উপ-ব্যবস্থাপক এবং নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলের সাবেক পাট বিভাগীয় প্রধান (ম্যানেজার,জুট) এমএএইচ মানোয়ার আলী, মাদারীপুরের ইউএমসি জুটমিলের চরমুগুরীয়ার ভারপ্রাপ্ত পার্সেজার মোফাজ্জেল হক, গুদাম ইনচার্জ মোঃ আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে নারায়নগঞ্জ ও রাজবাড়ী সদর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ওই তিন জনই হাজত খেটেছে।
তিনি ওই ডিও লেটারে আরো বলেছেন, পাট কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি জরুরী ভিত্তিতে এবং সরকারের উন্নয়ন ও ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে সরবরাহকৃত পাট ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা পরিশোধ পূর্বক অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধও জানান।
রাজবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলার বাদী ও পাট ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন মনো বলেন, ইউএমসি জুটমিলের পাট বিভাগীয় প্রধান (ম্যানেজার,জুট) এমএএইচ মানোয়ার আলী ও মাদারীপুরের ইউএমসি জুটমিলের চরমুগুরীয়ার ভারপ্রাপ্ত পার্সেজার মোফাজ্জেল হকের মৌখিক নির্দেশে ২০১৬ সালের ২১ আগষ্ট থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত দশটি ট্রাকে প্রতিটি ১৩০ কেজি ওজনের এক হাজার বেল পাট রাজবাড়ীর কালুখালী গুদাম হতে সরাসরি নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলে পাঠান। যার মূল্য ৬২লাখ ৮৭ হাজার ১২৫টাকা। অথচ তার পাঠানো চালান গুলো মোফাজ্জেল হক এবং এমএএইচ মনোয়ার আলী ও গুদাম ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম পরিবর্তন করে ইউএমসি জুটমিলের চরমুগুরীয়ার গুদাম মালিক ও পরিবহণ ঠিকাদার দীপক কংশ বনিকের মাধ্যমে পাট বহনকারী ট্রাক নম্বর ও চালকের নাম ঠিক রেখে সু-কৌশলে নতুন বিল তৈরী করে অবৈধ ভাবে ওই টাকা তুলে আতœসাৎ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি নরসিংদীর ইউএমসি জুটমিলে গিয়ে জানতে পারেন তার নামে কোন পাটের চালান জমা হয়নি। এর পর অনেক দেন দরবার করে তিনি পর্যায়ক্রমে ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পেলেও বাকী ৫২লাখ ৩২ হাজার ১২৫টা আজ অবধি তিনি পাননি।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি জানিয়ে গত বছরের ২৯ জুন তার পক্ষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর বরাবর পত্র প্রেরণ করেছিলেন, বর্তমান শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও সরকারী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্ত্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলী। ওই পত্রে বিষয়টি জরুরী ভিত্তিতে সরকারের উন্নয়ন ও ভাব মূর্তি অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে সরবরাহকৃত পাট ব্যবসায়ীদেও পাওনা টাকা পরিশোধ পূর্বক অভিযুক্ত দূর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও করেন। তবে তাতে কোন কাজ হয়নি। তার মামলার আসামি মনোয়ার আলী এখন আছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ জুট ফাইবার গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজের উপ-ব্যবস্থাপকের পদে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন-মাদারীপুরের ইউএমসি জুট মিলের চরমুগুরীয়ার ভারপ্রাপ্ত পার্সেজার মোজাম্মেল হক, ইউএমসি জুট মিলের সহ-পাট ক্রয় কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ দেওয়ান, ইউএমসি জুট মিল ঘাট কয়াল আব্দুস সাত্তার ওরফে কাজল, ইউএমসি জুট মিলের সহ-ব্যবস্থাপক (পাট) নুরুল ইসলামসহ সাতজন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একই ভাবে নারায়নগঞ্জের পাট ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহ সরকারের দুই কোটি ১৮ লাখ, ফরিদপুরের পাট ব্যবসায়ী বাচ্চুর ৮লাখ ৩০ হাজার, কিশোরগঞ্জের পাট ব্যবসায়ী তাজু, মাহাবুব ও খোকন বাবুর এক কোটি ১৭ লাখ, পাবনার পাট ব্যবসায়ী আরজুর ৩৩লাখ এবং পাবনার অপর পাট ব্যবসায়ী কার্তিক চন্দ্র সাহার ৬০লাখ টাকা আতœসাৎ করা হয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়