রাজবাড়ীতে স্বস্থি-পাবনায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চরমপন্থী বাহিনীর প্রধান জুলহাস নিহত –
- Update Time : ১০:৫১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১৮
- / ২১ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
পাবনার ঢালারচরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন জুলহাস বাহিনীর প্রধান জুলহাস উদ্দিন মন্ডল (৪২) নিহত হয়েছেন। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ পুলিশ সদস্য। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার ঢালারচরের বালাজ মেম্বারের মোড় এ ঘটনা ঘটে। জুলহাস পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার দড়িরচর গ্রামের জসিম মন্ডলের ছেলে।
তবে জুলহাসের রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামে আরেকটি বাড়ী রয়েছে। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তানরা বসবাস করেন।
এদিকে, বন্দুক যুদ্ধে জুলহাসের নিহত হবার খবর রাজবাড়ীতে পৌছাতেই অনেকেই স্বস্থি প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, জেলা সদরের গঙ্গাপ্রসাদপুর, মৃধা কলেজ এলাকা, সূর্যনগর, মহাদেবপুর, জৌকুড়া এলাকায় ব্যাপক প্রভাব ছিলো জুলহাসের। এই সব এলাকার বেশির ভাগ চাকুরীজীবিরা তার চাঁদাবাজীর শিকার হয়েছেন। চাঁদা না দিলে অনেকেই তার ও তার গ্রুপের লোকদের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। যে কারণে অনেকেই ওই সব এলাকা ছেলে জেলা শহরে অথবা জেলার বাইরে পরিবার পরিজন নিয়ে অবস্থান করছেন। ফলে জুলহাসের নিহত হবার খবরে তাদের মধ্যে স্বস্থি ফিরে এসেছে।
রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই হিরণ কুমার বিশ^াস জানান, জুলহাস রাজবাড়ী জেলা সদরের মিজানপুর ইউনিয়ন এবং চন্দনী ইউনিয়নের জৌকুড়া ফেরী ঘাট এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছিল। তার গ্রুপের সদস্যরা পাবনার একাধিক গ্রুপের সাথে প্রতিদ্বন্দীতার মাধ্যমে পদ্মা নদীসহ আশপাস চালায় চাঁদাবাজী করতো। একটি অস্ত্র মামলায় বেশ কিছু দিন সে রাজবাড়ী জেলা কারাগারে আটক ছিলো। কয়েক বছর আগে সে মুক্তিপায়। আর মুক্তিপাবার পর থেকেই চলে যায় আতœগোপনে। আতœগোপনে থেকে সে রাজবাড়ী ও পাবনা অঞ্চলের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালন করতো। যে কারণে তাকে গ্রেপ্তার করতে উভয় জেলার পুলিশ তৎপর ছিলো।
রাজবাড়ীর সাবেক এসপি এবং বর্তমান পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম জানান, রাজবাড়ীতে থাকা অবস্থাতেই তিনি জুলহাসকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়েছেন। দুর্ধর্ষ প্রকৃতির চরমপন্থী নেতা ছিলো জুলহাস।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, বেশ কয়েকটি মামলার পলাতক আসামি জুলহাসকে রাজধানী ঢাকার নিউ মার্কেট থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। গত মঙ্গলবার তাকে পাবনার আমিনপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার সহযোগী ও অস্ত্র গোলাবারুদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত একটার দিকে জুলহাসকে নিয়ে অভিযানে যায় পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে জুলহাসকে ছিনিয়ে নিতে তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা তাদের দল নেতা জুলহাসকে ছিনিয়ে নিতে অতর্কিত ভাবে এলোপাতাড়ি গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। এর মাঝে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যায় জুলহাস। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ জুলহাসকে উদ্ধার করে বেড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের দাবি, বন্দুকযুদ্ধে তাদের চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২টি দেশী পাইপগান, ১টি দেশী পিস্তল, ২টি রাম দাসহ বেশকিছু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত জুলহাস উদ্দিন মন্ডল চরমপন্থী দলের আঞ্চলিক নেতা ও জুলহাস বাহিনীর প্রধান ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আমিনপুর, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া থানায় হত্যাসহ ৯টি মামলা রয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়