অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেনা স্মৃতি-

- Update Time : ০৯:৪৫:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮
- / ২১ Time View
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
আগামী ১ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। তবে ওই পরীক্ষায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেও অতিরিক্ত অর্থ দিতে না পারায় অংশ গ্রহণ করতে পারছে না স্মৃতি খাতুন। সে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাবুপুর কছিমউদ্দিন বিদ্যাপীঠের ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো। অপরদিকে, ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি’র পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনায় শোকজ করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ফরম পূরণের অতিরিক্ত অর্থ ফেরৎ দেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সাদেকুর রহমান ওই নির্দেশ প্রদান করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের একাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী জানান, এসএসসির ফরম পূরণে তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ৭০৫ টাকা থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকা নেয়া হয়েছে। অথচ টাকা আদায়ের রশিদে ১ হাজার ৭০৫ টাকা লেখেছে। বিষয়টির প্রতিবাদে বিগত বছরের ৪ ডিসেম্বর সদর উপজেলার চন্দনী বাবুপুর বিকেবি ছাত্র কল্যান সংস্থার আয়োজনে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এর পর জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া হয় স্বারক লিপি। ওই স্বারলিপি প্রদানের পর জেলা প্রশাসক জেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে এ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটির কঠন করেন। ওই কমিটি গত ৭ ডিস্বেম্বর সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাবুপুর কছিমউদ্দিন বিদ্যাপীঠে যায় এবং শিক্ষার্থীদের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ গ্রহণ করেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ওই সময় তার কাছে স্মৃতি খাতুন নামে এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগে জানায় তার কাছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত অর্থ দাবী করে। সে ওই টাকা দিতে না পারায় তাকে এসএসসি’র ফরম পূরণ করতে দেয়া হয়নি, যে কারণে সে আর এবারের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারছে না। তিনি আরো বলেন, তার তদন্তে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া স্মৃতি খাতুনের পরীক্ষা না দিতে পারার বিষয়টিও দুঃখ জনক বলে অবহিত করা হয়েছে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া অতিরিক্ত ফি ফেরৎ দেয়ার নির্দেশনাসহ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই কাজ না করার জন্য সতর্ক করার কথাও বলা হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, এই বিদ্যালয় থেকে এবার ৮৬জন শিক্ষার্থী টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। তার মধ্যে মাত্র ৯জন সকল বিষয়ে উত্তির্ণ হয়। অন্য শিক্ষার্থীরা ২ থেকে ৭ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। তাদের দাবী তাহলে সারা বছর এই বিদ্যালয়ে কিভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়েছে যে, টেষ্ট পরীক্ষায় এতো শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। তারা মনে করেন, এখানে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। মূলত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের চাপে ফেলেছে। যাতে তারা জনপ্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারে এবং করেছোও তাই।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন জানান, শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত অর্থ ফেরৎ দেবার কোন সিদ্ধান্ত তারা গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নেননি। সেই সাথে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে থেকে তাকে কোন নির্দেশনাও দেয়া হয়নি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সাদেকুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি’র পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গতকাল সে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। সেই সাথে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ফরম পূরণের অতিরিক্ত অর্থ ফেরৎ দেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
পাঠক প্রিয়