রাজবাড়ীর চরশ্যামনগর দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে ১৩ শিক্ষক ও কর্মচারীর অভিযোগ দাখিল –
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের চরশ্যামনগর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্ণীতি এবং নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয়ের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। গত সোমবার বিকালে এই প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন শিক্ষক এবং কর্মচারী ওই অভিযোগ দাখিল করেছেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কাছে। অপরদিকে, একই অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেছেন, সুলতানপুর ইউনিয়নের চরশ্যামনগর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার আব্দুল মতিন মিয়াসহ ১৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারী। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, সুপার হিসেবে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এ মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকেই নানা রকম অনিয়ম করে আসছেন। বর্তমানে তা চরম আকার ধারণ করেছে। সুপার মাদ্রাসায় উপস্থিত না হয়ে হাজিরা খাতায় কয়েক দিনের স্বাক্ষর একসাথে করেন। আবার ছুটি নিলেও ছুটি শেষে ফিরে এসে ছুটি নেয়ার স্থলে পুনরায় স্বাক্ষর করেন। অপরদিকে সুপার প্রতিষ্ঠানের কাজের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। মাদ্রাসার কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও সুপার একের পর এক এডহক কমিটি গঠন করে চলেছেন। তবে হচ্ছেনা কোন সভা। সুপার কৌশলে মাদ্রাসার শিক্ষকদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ২০১৫ সালে মাদ্রাসার রিজার্ভ ফান্ডের টাকা হাতিয়ে নেয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে শর্ত সাপেক্ষে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার নামার ভিত্তিতে তাকে পুনরায় যোগদান করানো হলেও আজ অবধি বেশিরভাগ শর্তই তিনি পালন করেননি।
ওই অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের মাদকাশক্ত এবং পতিতালয়ে আসা যাওয়া করে। যে কারণে কতিপয় ঈদুল আযহার পূর্বে পতিতালয় থেকে তাকে উদ্ধার করে দাড়ি কেটে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আটক রাখে। মাদক সেবন এবং পতিতালয়ে গমনের বিষয়টি স্থানীয় জনগন ও মাদ্রাসার অভিবাবকদের মাছে ছড়িয়ে পরায় তারা নানা রকম প্রশ্নের সম্মখিন হচ্ছেন। সেই সাথে অভিভাবকরা মাদ্রাসা থেকে তাদের সন্তানদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ারও হুমকী দিচ্ছেন।
সুলতানপুর ইউনিয়নের চরশ্যামনগর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার আব্দুল মতিন মিয়া জানান, তারা ওই অভিযোগের অনুলিপি সদর উপজেলা চেয়ারম্যাস, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ঠ ৬ জনকে এ পত্র দেয়া হয়েছে।
ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং সুলতানপুর ইউনিয়নের চেয়রম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানান, ইতোমধ্যেই তারা ম্যানেজিং কমিটির সভা করেছে। সভায় সুপার কামরুজ্জামানকে কারণ দর্শনোর নোটিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা জানান, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ এমএ খালেক।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।