রাজবাড়ীতে ‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম’-এ চলছে দায়সারা পাঠদান –
রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের অদক্ষতার কারণে ‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম’ পদক্ষেপটির বাস্তবায়ন সঠিকভাবে এগোচ্ছে না। সম্প্রতি রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম ও মাঠে এলোমেলোভাবে অবস্থান করছে। আর শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে অফিস কক্ষে বসে আছেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, কিছু দিন ধরে শিক্ষকরা দু-তিনটি ক্লাস নেওয়ার পর অফিস কক্ষে গিয়ে বসে থাকেন। তাদের ধারণা, অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যার কারণে তাঁরা এমনটা করছেন।
দশম, নবম ও অষ্টম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনা করা হয় না। হাতে গোনা দু-একজন শিক্ষক মাঝেমধ্যে ক্লাস নেন। তবে তাদের মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাস করতে ভালো লাগে। এতে তারা দ্রুত পড়া আয়ত্তে আনতে পারে। তবে ধারাবাহিকতা না থাকায় তাদের খুব একটা উপকার হচ্ছে না। তাদের দাবি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনা করতে হবে প্রতিদিন। তাতে লেখাপাড়ায় মন বসবে, শেখায় আগ্রহ বাড়বে।
জানা গেছে, রাজবাড়ীতে ২০১০ সাল থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওই সময় থেকে পর্যায়ক্রমে সরকারিভাবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনার জন্য ল্যাপটপ, ইন্টারনেট মডেম, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, প্রজেক্টরের স্ক্রিন ও সাউন্ড সিস্টেম দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণ নেওয়া কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ল্যাপটপ ও প্রজেক্টরের স্বল্পতা, উপযুক্ত শ্রেণিকক্ষ ও সদিচ্ছার অভাবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনার কার্যক্রাম বেগবান হচ্ছে না। এসব প্রতিবন্ধকতা বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাটিয়ে উঠতে পারছে না। ফলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে পড়ানোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
সদর উপজেলার আলাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলীমুদ্দিন শেখ বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে যে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে, তা মাঝেমধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনায় বিঘœ ঘটছে।
সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান জানান, রাজবাড়ীতে ১৫০টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৭৫টি মাদরাসা ও ২৫টি কলেজ রয়েছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১৫টি প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনা করা হচ্ছে। নন-এমপিওভুক্ত ও বিদ্যুৎ না থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এর বাইরে রয়েছে। বর্তমানে জেলায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনার হার ৪০ শতাংশ। তাঁরা আরো ভালো অবস্থানে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন। নিয়মিতভাবে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনও করছেন।